হাওড়ার প্রশাসনিক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ১০০ দিনের কাজ-সহ নানা প্রকল্পে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র অভিযোগ তুলে আবার সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হাওড়ার পাঁচলার প্রশাসনিক সভা থেকে মমতা অভিযোগ করেছেন, গরিব মানুষের অন্ন কেড়ে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। গরিবদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে কেন্দ্রীয় সরকার নিজের ঢাক পেটাতে ব্যস্ত বলেও অভিযোগ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার পাঁচলার সভা থেকে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মমতা। রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান দেওয়ার পাশাপাশি তিনি তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথাও। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমার দুঃখ লাগছে একটাই— ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দিল না। যদি দিত কিছু বলতাম না। আমি বলতাম, নিশ্চয়ই দিয়েছে। কিন্তু এইগুলো তো আর লুকোনো যায় না।’’
মমতা অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার জব কার্ড প্রাপকদের দিয়ে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ করালেও বকেয়া রেখেছে ৭ হাজার কোটি টাকা। এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী মমতার বক্তব্য, ‘‘আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করব, গরিব লোকের টাকা মারবেন না। দয়া করে গরিবের টাকা ফিরিয়ে দিন।’’
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে লোকজনের কাজের টাকা বাকি রাখলেও ১০ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। তাঁর দাবি, ১০ লক্ষ জব কার্ড প্রাপককে কাজ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের মতো গ্রামীণ রাস্তা, আবাস যোজনা বাংলার বাড়ি প্রকল্পও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১ লক্ষ লোকের টাকা বকেয়া বলেও জানিয়েছেন মমতা। আবাস প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আবাস প্রকল্পে টাকা দেয় কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারই। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওরা শুধু ছবি লাগায়। বাড়ির টাকা ওরা একা দেয় না। এই টাকাটা ওরা রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যায়।’’ কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও ‘যেমন করে হোক’ টাকা জোগাড় করে কিছু গ্রামীণ রাস্তা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। সে জন্য দু’হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনাও রাজ্য সরকার করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।