আরজি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনায় ধৃত তৌসিফ। ছবি: কলকাতা পুলিশে ফেসবুক পেজ থেকে।
গ্রেফতারি এড়াতে চুলের ছাঁট বদলে ফেলেছিলেন তৌসিফ। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে হামলার ঘটনায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলার পরের দিনও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে গিয়েছিলেন তিনি। এখন পর্যন্ত এই হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ৩০ জন। সমাজমাধ্যমে সাধারণ মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
মেয়েদের ‘রাত দখল’-এর কর্মসূচি চলাকালীন আরজি করের জরুরি বিভাগ-সহ বেশ কিছু অংশে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পরে সমাজমাধ্যমে হামলার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে পুলিশ। সেখানে হামলাকারীদের লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিতও করা হয়েছে। সেই সূত্র ধরেই গ্রেফতার হয়েছেন বেশ কয়েক জন। এ জন্য সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সাধারণ মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, হামলাকারীদের ছবি পোস্ট করার পর সাধারণ মানুষের সহযোগিতাতেই আরও দু’জনকে শনাক্ত করে ধরা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই দু’জনের মধ্যে এক জন হলেন তৌসিফ। দ্বিতীয় জনের নাম রোহিত সাহা।
শুক্রবার ধৃত ২৪ জনের নাম, বয়স, ঠিকানা প্রকাশ্যে এসেছিল। ওই রাতে কেন হামলা চালানো হয়েছিল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়, আরজি করের চারতলার সেমিনার হল ভাঙাই হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল। সেই আবহেই বুধবারের রাতের ভাঙচুরের একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিয়োতে এক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সেমিনার হল চল, চল...’’ (যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেই ভিডিয়ো প্রসঙ্গে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেছেন, ‘‘সেমিনার হলে যাওয়ার কারও ইচ্ছে ছিল কি না, এমন কিছু পাওয়া যায়নি।’’
চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মেয়েদের কর্মসূচির মধ্যেই বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে একদল তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। তছনছ করা হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার, এইচসিসিইউ (হাইব্রিড ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), ওষুধের স্টোররুমও। হামলা চালানো হয় হাসপাতালের বাইরের চত্বরেও। ভাঙচুর করা হয় আরজি করের পুলিশ ফাঁড়ি, আন্দোলনকারী চিকিৎসক পড়ুয়াদের মঞ্চ। অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং পুলিশকর্মীদের উপর হামলাও চালানো হয়েছে সেই রাতে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় র্যাফ। তারা এসে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ভিড়। সে সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।