শিশুর থাইরয়েড হলে কী কী লক্ষণ দেখা দেবে? ফাইল চিত্র।
থাইরয়েডের সমস্যা কেবল বড়দের নয়, ছোটদেরও হতে পারে। অনেক সময়েই দেখা যায়, শিশুর বাড়বৃদ্ধি যেন এক জায়গায় আটকে আছে। নাভির অংশ ফুলে রয়েছে, মানসিক বিকাশও ঠিক মতো হচ্ছে না। চিকিৎসকেরা সে ক্ষেত্রে থাইরয়েড হয়েছে কি না তার পরীক্ষা করিয়ে নিতে বলেন। শিশুর থাইরয়েড ধরা পড়লে বাবা-মায়েরা ভয় পেয়ে যান। কারণ ভাবেন যে, সারা জীবনই হয়তো ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, ছোটবেলায় যদি থাইরয়েড ধরা পড়ে এবং সঠিক সময়ে তার চিকিৎসা শুরু হয়, তা হলে রোগ পুরোপুরি নির্মূল হওয়া সম্ভব।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, থাইরয়েডের সমস্যা দু’রকম হতে পারে। থাইরয়েড হরমোন কম ক্ষরিত হলে হাইপোথাইরয়েডিজ়ম হতে পারে আবার এই হরমোনের ক্ষরণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে তখন বা থাইরয়েড হরমোন কম ক্ষরণজনিত সমস্যা হাইপারথাইরয়েডিজ়ম হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি হাইপোথাইরয়েডিজ়মই বেশি দেখা যায়।
শিশুদের কেন হয় থাইরয়েড?
চিকিৎসকের বক্তব্য, শিশুদের থাইরয়েড গ্রন্থি ভাল করে তৈরি না হলে স্বাভাবিক ভাবেই থাইরয়েডের ক্ষরণ কম হয়। তখন হাইপোথাইরয়েডিজ়মের সমস্যা বেশি হয়। তা ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা যদি বিশেষ কোনও রকম ওষুধ খেয়ে থাকেন, তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও এমন হতে পারে।
কোন কোন লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হতে হবে?
শিশুর সার্বিক বিকাশ ঠিকমতো হবে না।
মুখ ফোলা লাগবে, গলার কাছে ফোলা ভাব থাকবে।
পেশির গঠন মজবুত হবে না, পেট ফোলা লাগবে। থাইরয়েডের কারণে অ্যাম্বিলিকাল হার্নিয়াও হতে পারে শিশুর। তখন নাড়ির কাছটা অস্বাভাবিক রকম ফুলে থাকে।
ত্বক খসখসে হয়ে যাবে, অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়বে শিশু।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
প্রতিকারের উপায় কী?
শিশুর জন্মের পরই থাইরয়েড স্ক্রিনিং করালে ভাল হয়। তাতে সেরাম টি-ফোর আর টিএসএইচ-এর মাত্রা দেখে নেওয়া যেতে পারে। সেরাম টি-ফোর কম বা টিএসএইচ বেশি থাকলেই বোঝা যাবে যে, খুদের হাইপোথাইরয়েডিজ়ম হচ্ছে। ছোটবেলায় হরমোন থেরাপি করালে সমস্যা নির্মূল হতে পারে।
জন্মের কয়েক মাস বা কয়েক বছর পরেও যদি হঠাৎ থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা হয়, তবে লক্ষণ দেখে ওষুধের ডোজ় নির্ধারণ করেন চিকিৎসকেরা। তবে চিকিৎসা খুব দ্রুত শুরু করতে হবে, না হলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।