কলকাতা পুরসভায় স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকের ঘরে চিকিৎসকেরা। পুজো কার্নিভালে ধৃত তপোব্রত রায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ ক্ষমা চাক— এমনই দাবি নিয়ে কলকাতা পুরসভায় বিক্ষোভ দেখালেন সেখানে কর্মরত চিকিৎসকেরা। দুর্গাপুজোর কার্নিভালে ‘প্রতীকী অনশনকারী’-র ব্যাজ পরে ডিউটিতে যোগদান করায় গ্রেফতার হয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার চিকিৎসক তপোব্রত রায়। তাঁর গ্রেফতারির বিরুদ্ধে কলকাতা পুরসভার চিকিৎসকদের একাংশ বিক্ষোভ দেখান পুরসভার মূল ভবনেই। বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের সঙ্গেই এসেছিলেন তপোব্রত। বুধবার তিনি আবারও দাবি করেন, তাঁকে ঠিক কী কারণে গ্রেফতার করা হয়েছিল তা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। এমন ঘটনার পরও ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ আন্দোলনে তিনি থাকবেন।
পুজোর ছুটির কারণে বন্ধ রয়েছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু পুরসভায় এসেছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। তাঁদের কাছেই নিজেদের ক্ষোভের কথা জানান চিকিৎসকেরা। এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে চিকিৎসকেরা দাবি করেন, তপোব্রতকে গ্রেফতারের কারণ জানাতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। তাই পুলিশকে তপোব্রতের কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি দুঃখপ্রকাশ না করা হয়, তা হলে তাঁরা আইনি পদক্ষেপ করবেন। সে ক্ষেত্রে পুরসভার চিকিৎসক যে হেতু অপমানিত হয়েছেন, তাই পুরসভাকেই আইনি সহায়তা দিতে হবে। তবে এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার কোনও আধিকারিক মুখ খুলতে চাননি।
প্রসঙ্গত, গত ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশন’ করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের সংহতি জানিয়ে ‘প্রতীকী অনশন’ করছেন চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবার ওই অনশনকারীদের সংহতি জানিয়ে সারা দেশে ১২ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি পালন করছে আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন)। কর্মসূচির নেতৃত্বে সংগঠনের জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার বিকেলে রেড রোডের দুর্গাপুজোর কার্নিভালে কর্মরত ছিল কলকাতা পুরসভার একটি মেডিক্যাল দল। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা চোট-আঘাত লাগলে প্রাথমিক চিকিৎসা করবেন বলেই রাখা হয়েছিল। সেই দলেই ছিলেন পুরসভার চিকিৎসক তপোব্রত। তাঁর শার্টে লাগানো ব্যাজে লেখা ছিল ‘প্রতীকী অনশনকারী’। অভিযোগ, সেই কারণে তাঁকে আটক করে ময়দান থানার পুলিশ। গ্রেফতারির পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ময়দান থানায়। খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্রই ময়দান থানার সামনে ভিড় জমতে শুরু করে বিক্ষোভকারীদের। ঘটনার ঘণ্টা চারেক পর ছেড়ে দেওয়া হয় ওই চিকিৎসককে। আর পর দিনই কলকাতা পুরসভায় কর্মরত চিকিৎসকেরা প্রতিবাদ জানিয়ে পুরসভাকে চাপে ফেলে দিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে তপোব্রত কলকাতা পুরসভার ১৬ নম্বর বরো-র সেকেন্ড মেডিক্যাল অফিসারের পদে রয়েছেন।