Health Updates of Admitted Junior Doctors

মাঝে মাঝে জ্বর আসছে পুলস্ত্যের, খাওয়ানো যাচ্ছে অনুষ্টুপকে, হাসপাতালে ভর্তি ছ’জন কেমন আছেন

এই মুহূর্তে অনশনকারী ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে আগের চেয়ে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে অনুষ্টুপ, পুলস্ত্যদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:১৫
Share:

(বাঁ দিকে) এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্য। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন ‘আমরণ অনশনে’ অসুস্থ হয়ে পড়া জুনিয়র ডাক্তারেরা। এই মুহূর্তে অনশনকারী ছ’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের কাউকে কাউকে এখনও আইসিইউ বা সিসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কারও শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সাধারণ শয্যায় স্থানান্তরিত করার চিন্তাভাবনা চলছে। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে অনুষ্টুপ, পুলস্ত্যদের।

Advertisement

এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্য টানা অনশনের পর গত রবিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পেটে যন্ত্রণা এবং বমির সমস্যা নিয়ে এনআরএসেই ভর্তি করানো হয় তাঁকে। তাঁর চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিমও গঠন করা হয়। বুধবার তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে আগের চেয়ে। তবে এখনও তিনি দুর্বল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাঝেমাঝে এখনও জ্বর আসছে পুলস্ত্যের। তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে তাঁর রক্ত, মূত্র-সহ একাধিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। শরীরে এখনও জলশূন্যতার সমস্যা রয়েছে পুলস্ত্যের। যা স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়। গত শনিবার রাতে ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। রাতেই তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল হাসপাতালে। অনুষ্টুপের মলের রং কালো হওয়ায় উদ্বেগে ছিলেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানিয়েছিলেন, শরীরের ভিতরে কোথাও রক্তক্ষরণ হলে মলের রং কালো হয়। অনুষ্টুপ চিকিৎসা চলাকালীন মুখ দিয়ে খাবার খেতেও চাইছিলেন না। তবে বুধবার তিনি আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁকে মুখ দিয়ে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। এখন আর মলের রং কালো নেই।

Advertisement

অনশনমঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি (নাক, কান, গলা সংক্রান্ত) বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক তনয়া পাঁজা। শৌচালয়ে যাওয়ার সময় মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। সোমবার রাতেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। আগের চেয়ে সুস্থ তনয়াও। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর রক্তচাপ, নাড়ির গতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এখনও শারীরিক ভাবে তিনি বেশ দুর্বল। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, লাগাতার অনশনের ফলে তনয়ার যে শারীরিক দুর্বলতা তৈরি হয়েছে, তা কাটতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তাঁকে ওআরএস খাওয়ানো হয়েছে মুখ দিয়েই। শরীরে গ্লুকোজ়ের পরিমাণও স্বাভাবিক। কিছুটা কম রয়েছে পটাশিয়াম। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদী চিকিৎসকেরা।

‘আমরণ অনশন’-এর চার দিনের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে আরজি করের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছিল। গড়া হয়েছিল মেডিক্যাল বোর্ড। গত কয়েক দিনে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সিসিইউ থেকে অন্য ওয়ার্ডে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অনিকেতকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু’-এক দিনের মধ্যে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

কলকাতার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে টানা অনশন শুরু করেছিলেন অলোক বর্মা এবং সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। সৌভিকের স্যালাইন চলছে এখনও। রক্তচাপের ওঠানামা আগের চেয়ে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গত মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পেটে যন্ত্রণা ছিল। এখন সেই সমস্যা কিছুটা কমেছে বলে খবর। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেই চিকিৎসাধীন অলোক। তিনি অনশনের তিন দিনের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আগের চেয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’-এক দিনের মধ্যে তাঁকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

উত্তরবঙ্গে এখন অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন সন্দীপ মণ্ডল। এ ছাড়া, ধর্মতলায় প্রথম দিন থেকে অনশনে রয়েছেন স্নিগ্ধা হাজরা, অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা। পরে যোগ দিয়েছেন আলোলিকা ঘোড়ুই, পরিচয় পাণ্ডা, স্পন্দন চৌধুরী এবং রুমেলিকা কুমার। যাঁরা ইতিমধ্যে অনশন করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, পরবর্তী সময়ে আবার তাঁদের অনশনে ফেরার মতো কোনও ভাবনা আপাতত নেই বলেই খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement