Global Firepower Index 2025

পিছলে প্রথম দশের বাইরে পাকিস্তান, জোর টক্কর আমেরিকা-রাশিয়া-চিনে! সেনাশক্তিতে কোথায় ভারত?

সামরিক দিক থেকে বিশ্বের কোন দেশ কতটা শক্তিশালী, এ বার সেই তালিকা প্রকাশ করল ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’। সেখানে আগের অবস্থান থেকে নীচে নেমে গিয়েছে পাকিস্তান। কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৩৩
Share:
০১ ১৮

সৈন্যশক্তির দিক থেকে কোন দেশ কতটা শক্তিশালী? সেই তালিকা প্রকাশ করল ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’। সেখানে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে ভারত। অন্য দিকে অবনমন হয়েছে পাকিস্তানের। যদিও ফৌজি ক্ষমতায় নয়াদিল্লির থেকে এক ধাপ উপরে রয়েছে চিন।

০২ ১৮

মোট ৬০টি আলাদা আলাদা বিষয়কে বিচার-বিশ্লেষণ করে এই তালিকা তৈরি করে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’। এর মধ্যে অন্যতম হল সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। এ ছাড়া কোন দেশের কাছে কী কী অত্যাধুনিক হাতিয়ার রয়েছে, তালিকা তৈরির সময়ে সেটিও খতিয়ে দেখে তারা। এ বার মোট ১৪৫টি দেশকে র‌্যাঙ্কিং দিয়েছে এই আন্তর্জাতিক ফৌজি সমীক্ষক সংস্থা।

Advertisement
০৩ ১৮

২০০৫ সাল থেকে বিশ্বের তাবড় শক্তিশালী দেশগুলির ফৌজি শক্তি সংক্রান্ত তালিকা তৈরি করে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’। প্রথম দিন থেকেই এক নম্বর স্থানটি ধরে রেখেছে আমেরিকা। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে নেই অন্য কোনও দেশ। পাওয়ার ইনডেক্স ২০২৫-এ ওয়াশিংটনের প্রাপ্ত পয়েন্ট ০.০৭৪৪। প্রসঙ্গত, এই সমীক্ষক সংস্থার সূচক অনুযায়ী, যে রাষ্ট্র শূন্যের যত কাছে থাকবে, তার ফৌজি শক্তি তত বেশি।

০৪ ১৮

সমীক্ষকদের দাবি, আমেরিকার হাতে রয়েছে ২১ লক্ষ ২৭ হাজার ৫০০ সৈনিকের এক বিশাল বাহিনী। দেশের বাইরে অন্তত ১০০টি সেনাঘাঁটি রয়েছে ওয়াশিংটনের। সেখান থেকে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় আক্রমণ শানানোর ক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। ২০২৩-’২৪ আর্থিক বছরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে আটলান্টিকের পারের এই ‘সুপার পাওয়ার’।

০৫ ১৮

‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’-এর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। পয়েন্ট কিছুটা কমেছে এই মহাশক্তিধরের। সমীক্ষকেরা মস্কোকে দিয়েছে ০.০৭৮৮ নম্বর। বিশ্লেষকদের দাবি, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে চলা ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ ফৌজের সুনাম কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। ক্রেমলিন খুব দ্রুত কিভের পতন ঘটাতে পারবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

০৬ ১৮

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে রাশিয়ার কাছে। সেই সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজারের আশপাশে বলে জানা গিয়েছে। তা ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধে আন্তর্মহাদেশীয় হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ওরেশনিক’ ব্যবহার করেছে মস্কো। মারণাস্ত্রটি শব্দের প্রায় ১০ গুণ গতিতে ছুটে গিয়ে নিখুঁত নিশানায় হামলা চালাতে সক্ষম। ফলে পয়েন্ট কিছুটা কমলেও তালিকায় নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে এককালের সোভিয়েত ‘সুপার পাওয়ার’।

০৭ ১৮

রাশিয়ার সমান পয়েন্ট পেয়েও তালিকায় তিন নম্বর স্থান পেয়েছে চিন। বেজিংয়ের মোট ৩১ লক্ষ ৭০ হাজার সৈনিক রয়েছে বলে জানিয়েছে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’। শুধু তা-ই নয়, রণতরীর সংখ্যার নিরিখে আমেরিকাকে ছাপিয়ে গিয়েছে ড্রাগনভূমি। দুনিয়ার বৃহত্তম নৌশক্তির তকমা পেয়েছে তারা।

০৮ ১৮

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করেছে চিন। যদিও মস্কো ও বেজিংয়ের মধ্যেও সীমান্ত সংঘাত রয়েছে। গত কয়েক বছরে ড্রাগনের ফৌজি শক্তি বেশ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমেরিকার আগে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান আকাশে উড়িয়েছে পিপল্‌স লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) বায়ুসেনা। পাশাপাশি শক্তিশালী ড্রোন এবং রকেট বাহিনীও রয়েছে বেজিংয়ের। আফ্রিকা, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকায় একাধিক সেনাঘাঁটি রয়েছে চিনা লালফৌজের।

০৯ ১৮

এই তালিকায় ভারত রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’-এর সমীক্ষকেরা নয়াদিল্লিকে দিয়েছেন ০.১১৮৪ পয়েন্ট। তিন বাহিনী মিলিয়ে এ দেশের মোট সৈন্যসংখ্যা ৫১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৫০। এর মধ্যে শুধু স্থলবাহিনীতেই রয়েছেন প্রায় ১২ লক্ষ সৈনিক।

১০ ১৮

২০২৪-’২৫ আর্থিক বছরে প্রতিরক্ষা খাতে ৬ লক্ষ ২১ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্র। ২০২৩-’২৪ আর্থিক বছরের এটি ছিল ৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বা জিডিপি) ১.৮৯ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে খরচ করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আসন্ন অর্থবর্ষে (পড়ুন ২০২৫-’২৬) এই অঙ্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।

১১ ১৮

সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাটিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের দাবি, খুব দ্রুত ‘হাইপারসোনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে ফেলবে নয়াদিল্লি। এ ছাড়া অত্যাধুনিক ড্রোন প্রযুক্তিতেও উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় শক্তি বৃদ্ধি করতে একের পর এক রণতরী এবং ডুবোজাহাজ নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি সবাইকে চমকে দিয়ে গত দু’বছরে পরমাণু অস্ত্রের সম্ভারও বাড়িয়েছে ভারত।

১২ ১৮

তালিকায় পাঁচ, ছয় এবং সাত নম্বর স্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার মহাশক্তি জাপান পেয়েছে অষ্টম স্থান। তুরস্ক এবং ইতালি যথাক্রমে নয় এবং ১০ নম্বর স্থানে রয়েছে। প্রথম ১০-এ স্থান পাওয়া দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তুরস্ক এবং ইটালি পরমাণু শক্তিধর নয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, আণবিক হাতিয়ার থাকা সত্ত্বেও প্রথম দশে জায়গা পায়নি পাকিস্তান, ইজ়রায়েল এবং উত্তর কোরিয়া।

১৩ ১৮

পাকিস্তান এই তালিকায় পেয়েছে ১২তম স্থান। ইসলামাবাদের প্রাপ্ত নম্বর ০.২৫১৩। গত বছর (পড়ুন ২০২৪) থেকে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে চলা সীমান্ত সংঘর্ষ পাক সেনার র‌্যাঙ্কিংয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা। একটা সময়ে এই তালিকায় সাত বা আট নম্বর স্থান ধরে রাখত ইসলামাবাদ।

১৪ ১৮

এই তালিকায় পাকিস্তানের পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে আরও কয়েকটি কারণের কথা বলেছেন বিশ্লেষকেরা। এর মধ্যে অন্যতম হল ইসলামাবাদের আর্থিক দুরবস্থা। প্রায় দেউলিয়ার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতের পশ্চিম পারের প্রতিবেশী। এ ছাড়া হাতিয়ারের ব্যাপারে অত্যধিক চিনা নির্ভরতা রয়েছে রাওয়ালপিন্ডির সেনাকর্তাদের।

১৫ ১৮

‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’-এর সমীক্ষকেরা জানিয়েছেন, সৈন্যশক্তির দিক থেকে দুই চিরশত্রু ইরান এবং ইজ়রায়েল একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তালিকায় তেহরান রয়েছে ১৪ নম্বর স্থানে। তার ঠিক পরেই রয়েছে তেল আভিভ।

১৬ ১৮

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম জানিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে বেড়েছে নিরাপত্তাহীনতা। এর ফলে ভূরাজনৈতিক সংঘাতের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। গত বছর (পড়ুন ২০২৪) প্রায় ৬০টি সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনা রেকর্ড করেছে এই আন্তর্জাতিক সংগঠন। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

১৭ ১৮

ফোরামের গবেষকদের দাবি, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের মধ্যে যুদ্ধের জেরে নিরীহ নাগরিকদের প্রাণহানির সংখ্যা ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ব ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলি বেশি পরিমাণে রক্তাক্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

১৮ ১৮

সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট। সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় আকাশচুম্বী হয়েছে। ২০২৩ সালে ফৌজের পিছনে মোট খরচ হয়েছে ২ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি ডলার।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement