বুধবার ধর্মতলায় জুনিয়রদের অনশনমঞ্চ। — নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলার অনশনমঞ্চে আন্দোলনের ঝাঁজ বৃদ্ধি করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবারই সেই অনশনমঞ্চে নতুন করে যোগ দিয়েছেন আরও দু’জন। বর্তমানে ধর্মতলায় অনশনে রয়েছেন সাত জন আর উত্তরবঙ্গে এক জন। তবু অনশনমঞ্চে এখনও অনড় আন্দোলনকারীরা। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। কেমন আছেন অনশনকারীরা?
গত ৫ অক্টোবর থেকে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছিলেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছয় জুনিয়র ডাক্তার। তাঁরা হলেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। তার পরের দিনই অনশনে যোগ দেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোও। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১০ অক্টোবর রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই ডাক্তার সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অলোক বর্মাও অনশন শুরু করেছিলেন। তবে বর্তমানে দু’জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুষ্টুপকে। পেটে যন্ত্রণা হচ্ছিল তাঁর। রবিবার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন হন পুলস্ত্য। সোমবার তনয়াকেও হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এর মাঝে শুক্রবার রাতে নতুন করে অনশনে যোগ দিয়েছেন পরিচয় পণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। আর মঙ্গলবার থেকে অনশনে বসেছেন রুমেলিকা কুমার এবং স্পন্দন চৌধুরী। উত্তরবঙ্গে সন্দীপ মণ্ডল নামে এক জুনিয়র ডাক্তার সোমবার থেকে অনশন করছেন।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
অনশনকারী ডাক্তারেরা মূলত জল খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বেড়েছে দুর্বলতা। সকলেই অনশনকারীদের রক্তে সিবিজির মাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সেই সঙ্গে মাথা ধরা এবং দুর্বলতা রয়েছে সকলেরই। শরীরে জলশূন্যতার কারণে পেশিতে টান ধরার মতো সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। আপাতত দিনে দু’বার করে তাঁদের রক্তচাপ, নাড়ির গতি, ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ (সিবিজি) মাপা হচ্ছে। রোজকার মতো বুধবার সকালেও অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে।
অনশনকারীরা কে কেমন আছেন?
অর্ণব মুখোপাধ্যায়: এসএসকেএমের নেফ্রোলজি বিভাগের পিডিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া
রক্তচাপ: ১২৪/৯২
নাড়ির গতি: ৮৪
সিবিজি: ৬৭
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা: কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের পিজিটি তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া
রক্তচাপ: ১০২/৮০
নাড়ির গতি: ৮০
সিবিজি: ৬৩
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
স্নিগ্ধা হাজরা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার
রক্তচাপ: ১০৪/৭০
নাড়ির গতি: ৮৬
সিবিজি: ৬১
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
পরিচয় পণ্ডা: ভিআইএমএস (শিশুমঙ্গল) হাসপাতালের ইএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র
রক্তচাপ: ১২৪/৯০
নাড়ির গতি: ৮৮
সিবিজি: ৭২
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
আলোলিকা ঘোড়ুই: কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগে পিজিটি প্রথম বর্ষের ছাত্রী
রক্তচাপ: ১০০/৮০
নাড়ির গতি: ৮৮
সিবিজি: ৬৫
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
রুমেলিকা কুমার: অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্থের পভার্টি মেডিসিনের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া
রক্তচাপ: ১০৪/৬০
নাড়ির গতি: ৭২
স্পন্দন চৌধুরী: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র
রক্তচাপ: ১১৮/৮০
নাড়ির গতি: ৯২
সন্দীপ মণ্ডল: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি (নাক, কান, গলা সংক্রান্ত) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র
রক্তচাপ: ১৩০/৭৮
নাড়ির গতি: ১০২
সিবিজি: ৪৮