ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র ।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষায় পাশ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগ উঠল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। তবে পরে অবশ্য অভিযোগকারীর তরফে সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁকে জোর করে ওই অভিযোগ করানো হয়েছিল বলেও অভিযোগকারী ছাত্রের দাবি। আর তা নিয়ে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অন্দরে বিতর্ক অব্যাহত।
পড়ুয়া এবং ছাত্র সংসদ সদস্যদের একাংশ জানিয়েছেন, অভিযোগকারী কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়া। তাঁর অভিযোগ ছিল, কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তথা চিকিৎসক মনবুর আলি এক বছর আগে পরীক্ষায় পাশ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। দু’টি বিষয়ে পাশ করানোর জন্য ওই ছাত্রের কাছে ৪০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই মতো নাকি মনবুরকে ২৫ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন অভিযোগকারী পড়ুয়া। তবে ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায় তিনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। অভিযোগ, এর পর মনিবুরের কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। পরে চাপ সৃষ্টি করায় টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এই মর্মে ১৩ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠিও দেন অভিযোগকারী।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই মনবুর অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মনবুরের দাবি, তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন। সেই অভিযোগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানিয়েছিলেন। আর তাই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
পরে অবশ্য মনিবুরের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন অভিযোগকারীও। ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও একটি চিঠি দিয়ে ওই চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়া জানান, তাঁকে জোর করে চিঠি লেখানো হয়েছিল। অভিযোগকারী চিঠিতে উল্লেখ করেন, বোনের চিকিৎসার জন্য মনিবুরের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। সেই টাকায় তিনি মনিবুরকে ফেরত দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কয়েক জন সিনিয়র মনিবুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য ৫-৬ ঘণ্টা ধরে তাঁকে মানসিক চাপ দিয়ে ওই চিঠি লিখতে বাধ্য করান বলে অভিযোগকারীর দাবি।
সোমবার বিষয়টি নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন, কলেজের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট শুভম সরকার এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট সৌমদীপ মণ্ডল। সেই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়া এবং ছাত্র সংগঠনের সদস্যরাও। পড়ুয়া এবং ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের একাংশের অভিযোগ, পরীক্ষায় পাশ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে পড়ুয়াদের কাছে টাকা নিয়েছিলেন মনিবুর। এক পড়ুয়ার মা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, পরীক্ষায় পাশ করার জন্য মনিবুর ওই পড়ুয়ার কাছ থেকে সাড়ে চার লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন এক পড়ুয়ার মা।
অন্য দিকে হাসপাতালের ছাত্র সংসদের বর্তমান সম্পাদক আমির সোহেল বলেন, ‘‘এই ঘটনা সত্যি না মিথ্যা জানি না। আমার কাছে এখনও কোনও অভিযোগ আসেনি। প্রাক্তন ছাত্ররা নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে। বর্তমান পড়ুয়াদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এই সব করছে প্রাক্তন পড়ুয়ারা।’’