এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা রায় এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
ববিতা সরকারকে দেওয়া শিক্ষকতার চাকরি গত মে মাসে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই চাকরি দেওয়া হয়েছিল অনামিকা বিশ্বাস রায়কে। তার পর থেকে কেটে গিয়েছে চার মাস। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশিত চাকরিটি এখনও হাতে পাননি অনমিকা। সোমবার এই নিয়েই বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়ল পুলিশ।
সোমবার অনামিকার চাকরি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টে। অনামিকা এখনও চাকরিটি পাননি শুনে এজলাসে বসেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। কিছুটা উঁচু স্বরেই জানতে চান, কেন এখনও চাকরি পাননি অনামিকা? জবাবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান পুলিশ ভেরিফিকেশনে আটকে রয়েছে ওই চাকরি। অনামিকার পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য পুলিশি যাচাই না হওয়ায় ওই চাকরি দেওয়া যাচ্ছে না। শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি উচ্চস্বরেই প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন ভেরিফিকেশন হয়নি? কোন থানা ছিল দায়িত্বে?’’
অনামিকা শিলিগুড়ির কন্যা। তাঁর নাম-ঠিকানা সংক্রান্ত পুলিশি যাচাইয়ের দায়িত্ব শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটেরই। বিষয়টি বিচারপতিকে জানাতেই তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন আটকে থাকবে? উনি কি সন্ত্রাসবাদী?’’ এর পরেই পুলিশকে কটাক্ষ করে আরও একটি মন্তব্য করেন বিচারপতি। বলেন, ‘‘আসল সন্ত্রাসবাদী এলে তো পালিয়ে যাবেন!’’
এর পরই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের কাছে দ্রুত রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি। আদালত সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর ৩টের মধ্যেই ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার নিয়োগে কারচুপির অভিযোগে তাঁর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বেতনও ফেরাতে হয় আদালতকে। সেই বেতনের পুরো টাকাই পেয়েছিলেন শিলিগুড়ির এসএসসি পরীক্ষার্থী ববিতা। কিন্তু সেই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান অনামিকা। তাঁর মামলার পর দেখা যায়, ববিতার নিয়োগে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। অনামিকা তাঁর চেয়েও ২ নম্বর বেশি পেয়েছেন। ফলে তিনিই চাকরির যোগ্য দাবিদার। এর পরই ববিতার চাকরি বাতিল করেন বিচারপতি। তাঁর চাকরি দেওয়া হয় অনামিকাকে। সেই সঙ্গে পরেশ-কন্যার থেকে যে টাকা ববিতা পেয়েছিলেন, তা-ও অনামিকার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।