গ্রেফতারের পর মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে ফের ইডির দফতরে আনা হল সুকন্যাকে। —নিজস্ব চিত্র।
চাকরিতে প্রভাব খাটানো থেকে শুরু করে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, নানা অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের বিরুদ্ধে। গরু পাচার মামলায় সেই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের পরেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অভিযোগ, সুকন্যা তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
কী কী অভিযোগ রয়েছে সুকন্যার বিরুদ্ধে?
ইডি সূত্রে দাবি, সুকন্যার নামে ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত আছে। ১৬ কোটি টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজ়িট রয়েছে তাঁর নামে। এ ছাড়া, বীরভূমে সুকন্যার মালিকানায় রয়েছে বিঘা বিঘা জমি।
সুকন্যার নামে বোলপুর বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় ১০ বিঘা জমি আছে বলে দাবি ইডির। এ ছাড়া, বোলপুরেও তাঁর কিছু জমি রয়েছে। অভিযোগ, একটি সংস্থার মালিকানা রয়েছে সুকন্যার নামে। রয়েছে একটি চালকলও। এ ছাড়া, ইডির আরও অভিযোগ, সুকন্যা বাবার যাবতীয় ব্যবসার দেখাশোনা করতেন। সেই সংক্রান্ত সব তথ্যই তাঁর কাছে আছে।
সুকন্যার চাকরি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বার বার। সরকারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষিকা হিসাবে চাকরি করতেন সুকন্যা। অভিযোগ, শাসকদলের নেতা হিসাবে অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে মেয়ের এই সরকারি চাকরি পাকা করেছেন। কী ভাবে কোন পরীক্ষা দিয়ে সুকন্যা প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। এ-ও অভিযোগ উঠেছিল, সুকন্যা নাকি স্কুলে না গিয়েই দিনের পর দিন বেতন নিয়েছেন।
অনুব্রত-কন্যার বয়স কম। খুব বেশি দিন তিনি চাকরি করেননি। স্বল্প সময়ে এত সম্পত্তির মালিকানা তিনি কী ভাবে পেলেন, কী ভাবেই বা এত টাকা তিনি সঞ্চয় করলেন, প্রশ্ন উঠেছে। হিসাব বহির্ভূত এই সম্পত্তি প্রথম থেকেই ইডির নজরে ছিল। অভিযোগ, গরু পাচারকাণ্ডের সঙ্গে এই সম্পত্তির যোগ থাকতে পারে। তাই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একাধিক বার সুকন্যাকে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি।
দিল্লিতে ইডির দফতরে এর আগে ৩ বার সুকন্যাকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু নানা অজুহাতে তিনি হাজিরা এড়িয়েছেন। বুধবার ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে দিল্লি যান অনুব্রতের কন্যা। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসহযোগিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।