বিস্ফোরণের অভিঘাতে এমনই গর্ত তৈরি হয়েছে রাস্তায়। ছবি: পিটিআই।
নিরাপত্তা বাহিনীর ধারাবাহিক তৎপরতা সত্ত্বেও ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলা অব্যাহত। বুধবার বস্তার ডিভিশনের দান্তেওয়াড়া জেলায় সিপিআই(মাওবাদী) গেরিলারা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশের গাড়ি। প্রাথমিক তদন্তে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গাড়ির চালক এবং সওয়ারি ১০ জন ‘ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডস’ (ডিআরজি) বাহিনীর জওয়ানের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ওই আইইডি (ইমপ্রোভাইজ়ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরি করতে অন্তত ৫০ কিলোগ্রাম শক্তিশালী বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে মাওবাদী গেরিলা বাহিনী।
প্রত্যন্ত এলাকার কাঁচা রাস্তা নয়, পিচ ঢালা জেলা সড়ক খুঁড়ে ওই মাইন বসিয়েছিল মাওবাদীরা। টহলদারি শেষে জওয়ানদের গাড়ি ফেরার সময় তারা বিস্ফোরণ ঘটায়। কী ভাবে তারা পিচের রাস্তা খুঁড়ে মাইন বসালো, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। বিস্ফোরণের অভিঘাতে ওই সড়কে ২০ ব্যাসের গর্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। যার গভীরতা প্রায় ১০ ফুট! পুলিশ সূত্রের খবর, বিস্ফোরণ এতটাই প্রবল ছিল যে গাড়িটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ১৫০ মিটার দূর পর্যন্ত ছিটকে পড়েছে গাড়ির ধ্বংসাবশেষ!
পুরো ঘটনার জন্য উঠে আসছে নিরাপত্তা গাফিলতির কথাও। সূত্রের খবর, কিছু দিন আগেই পুলিশি অভিযানে নিহত সহকর্মীদের স্মরণে ‘জনপিঠুরি’ পালন করছিল মাওবাদীরা। সে সময়ই তাদের গেরিলা বাহিনী পিএলজিএ ‘প্রত্যাঘাত’ করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। গত সপ্তাহে বস্তার এলাকাতেই কংগ্রেসের এক বিধায়কের গাড়িতেও হামলা চালিয়েছিল তারা। এই পরিস্থিতিতে মাইন প্রতিরোধী গাড়ি ব্যবহার না করে কেন ডিআরজি জওয়ানদের ভাড়া করা সাধারণ ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সে প্রশ্ন উঠেছে।
ছত্তীসগঢ় পুলিশের আইজি (বস্তার রেঞ্জ) পি সুন্দররাজ অবশ্য দান্তেওয়াড়ার হামলাকে ‘মাওবাদীদের টিকে থাকার মরিয়া চেষ্টা’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর গড়ে ৪০০ মাওবাদী আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসছেন। এই পরিস্থিতিতে মনোবল টিকিয়ে রাখতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনার নিন্দা করে জানিয়েছেন, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। জওয়ানদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।