ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যের সব জেলাশাসকদের একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে নবান্ন থেকে। বৃহস্পতিবার পাঠানো ওই নির্দেশিকায় ভোট-হিংসা সংক্রান্ত সব রকমের তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে তাঁদের কাছে। একই সঙ্গে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে ভোট-হিংসায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়।
গত ৮ জুন রাজ্য নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে। তার পর থেকে রাজ্যে ৪৭ জন ভোট-হিংসায় মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু। বৃহস্পতিবারও হিংসার ঘটনা ঘটেছে। সেই আবহে বৃহস্পতিবার জেলাশাসকদের ওই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে নবান্ন। সেখানে জেলাশাসকদের জানানো হয়েছে, আদলতের নির্দেশে রাজ্যকে ভোট-হিংসা সংক্রান্ত একটি হলফনামা জমা দিতে হবে। সেই হলফনামা জমা দিতে গেলে বেশ কিছু তথ্য প্রয়োজন। জেলাশাসকদের সেই তথ্য পাঠানোর নির্দেশই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সঙ্গে ওই নির্দেশিকায় একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথাও বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ভোটপর্বে হিংসায় ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে, তা বিশদে জানাতে হবে। কড়়া ব্যবস্থা নিতে হবে ভোট-হিংসায় নাম জড়ানো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। নথিবদ্ধ করতে বলা হয়েছে সমস্ত এফআইআর। অশান্তির ঘটনায় যাঁরা জখম হয়েছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ভোট-হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার বন্দোবস্ত করতে হবে। তবে তা করতে গিয়ে যাতে কোনও স্কুল বা কলেজ বন্ধ না হয়, সেটা সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে রাজ্যে যে সব অশান্তির ছবি এবং ভিডিয়ো সংবাদমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে, তা নিয়ে জেলাশাসকদের কাছ থেকে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে।
গত শনিবার, ৮ জুলাই রাজ্যে এক দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। ভোটের দিন কয়েকটি জেলায় প্রাণহানি, রক্তপাত, বোমাবাজি, সংঘর্ষ হয়। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই অশান্তি শুরু হয় জেলায় জেলায়। ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তায় ছিল রাজ্য পুলিশও। তার পরও বিভিন্ন জেলা অশান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার গণনার দিনও বোমাবাজি, খুনোখুনি হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী-সহ অনেকেই একাধিক মামলা করেছে কলকাতা হাই কোর্টে। সে রকমই একটি মামলায় আগামী ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে হাই কোর্টে হলফনামা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। তার আগে ভোটপর্বে হিংসা নিয়ে জেলাশাসকদের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইল নবান্ন।