বান্ধবী এবং তাঁর মায়ের সঙ্গেও নাকি সম্পর্ক ছিল অয়নের। প্রতীকী ছবি।
মত্ত অবস্থায় বান্ধবীর বাড়িতে পৌঁছেছিলেন অয়ন মণ্ডল! তদন্তে নেমে এমন তথ্যই উঠে এল পুলিশের হাতে। পুলিশ সূত্রে খবর, দশমীর দিন রাত ১১ নাগাদ মত্ত অবস্থায় বান্ধবীর রমাকান্তপুরের উদয়াঞ্চলের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন অয়ন। কিন্তু অয়ন সেখানে পৌঁছে দেখেন, তাঁর বান্ধবী বাড়িতে নেই। বান্ধবীকে বাড়িতে না পেয়ে বিরক্ত হয়ে বান্ধবীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন অয়ন। বান্ধবী বাড়ি ফিরে এলে অয়ন তাঁকে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। বান্ধবীর মা রুমা জানা এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে অয়ন তাঁকেও মারধর করেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছ, এই সময় অয়নের বান্ধবীর ভাই চিৎকার শুনে ঘরে ঢোকে এবং অয়নকে আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাতেও অয়নকে থামানো যায়নি। এর পরই দিদি এবং মায়ের কথা শুনে একটি ইট জাতীয় ভারী বস্তু দিয়ে অয়নের মাথায় আঘাত করে। চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অয়ন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এর পরই অয়নের বান্ধবীর বাবা দীপক জানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। বাবার নির্দেশে অয়নের বান্ধবীর ভাই, তার দুই বন্ধুকে ডেকে পাঠায়। অয়নের বান্ধবীর ভাইয়ের দুই বন্ধুরা দু’হাজার টাকার বিনিময়ে কুঁদঘাট থেকে একটি ‘ছোটো হাতি’ ভাড়া করে। পণ্যবাহী ছোট হাতি গাড়ির চালককে বলা হয় বাড়ির কিছু জিনিসপত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে।
ওই গাড়ির চালক কুঁদঘাট থেকে গাড়ি নিয়ে হরিদেবপুরে পৌঁছন। গাড়িতে মৃতদেহ তোলা হচ্ছে বুঝতে পেরে গাড়ির চালক তা নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন। কিন্তু পরে আরও বেশি টাকার লোভে রাজি হয়ে যান বলেই সূত্রের খবর।
এর পরই অয়নের মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে মগরাহাটের কাটপোলের কাছে করিমাবাদে ফেলে দেওয়া হয়। মগরাহাটের ওই জায়গা থেকেই পরে পুলিশ অয়নের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
প্রসঙ্গত, নিহত অয়ন মণ্ডলের বান্ধবী এবং বান্ধবীর মা এবং বান্ধবীর ভাইকে শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এর পর গ্রেফতার করা হয় বান্ধবীর বাবা, বান্ধবীর ভাইয়ের এক বন্ধু এবং ওই পণ্যবাহী গাড়ির চালককে। শনিবারই তাঁদের আদালতে তোলা হবে। সূত্রের খবর, ত্রিকোণ সম্পর্কের জেরেও খুন হয়ে থাকতে পারেন অয়ন। অয়নের এক বন্ধুর দাবি, বান্ধবী এবং তাঁর মায়ের সঙ্গেও নাকি সম্পর্ক ছিল অয়নের।