হাতে আর মাত্র কয়েক দিন। তার পরেই শুরু হয়ে যাবে ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান। বুধবার গভীর রাতে অস্ট্রেলিয়া রওনা হয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে ২২ অক্টোবর। ভারত ২৩ অক্টোবর তাদের প্রথম ম্যাচে নামছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। মুম্বই থেকে বুধবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার বিমান ধরেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। তৃতীয় বার বিশ্বকাপ জিততে ভারত তাকিয়ে থাকবে রোহিত-কোহলিদের দিকে। কিন্তু নেপথ্যে কাজ করছেন যে মাথারা, তাঁদের সঙ্গে পরিচয় আছে কি?
রাহুল দ্রাবিড়: নন প্লেয়িং সেই দলে রয়েছেন ১৬ জন। দলের ‘ক্যাপ্টেন’ হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়।
বিক্রম রাঠৌর: বিশ্বকাপ জয়ের উদ্দেশ্যে যাওয়া ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসাবে থাকছেন বিক্রম রাঠৌর। রাঠৌর প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার এবং এর আগে বিশ্বকাপ দলের নির্বাচক কমিটিতেও ছিলেন।
পরশ মামব্রে: দলে বোলিং কোচ হিসাবে আছেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার পরশ মামব্রে। ২০১৬ সাল থেকে দ্রাবিড়ের সঙ্গে রয়েছেন মামব্রে।
অরুণ কানাডে: কাজ শুরু করেছিলেন আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (আরসিবি) দলের হয়ে। এর পর পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় দলের সঙ্গে কাজ করছেন অরুণ কানাডে। কানাডের প্রধান কাজ হল প্রতি খেলার আগে খেলোয়াড়দের, বিশেষ করে বোলারদের পেশি শিথিল রয়েছে কি না তা দেখে নেওয়া। কোহলি এবং অন্য সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে কানাডের সম্পর্ক খুব ভাল বলেই সূত্রের খবর।
হরি মোহন: নন প্লেয়িং দলের ভিডিয়ো অ্যানালিস্ট। দ্রাবিড় ভারতীয় দলের কোচ হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই হরি ভারতীয় দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত। রাহুল-পরশদের খেলা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করার পাশাপাশি, প্রতিটি ম্যাচের আগে খেলোয়াড় এবং দলের বাকি সদস্যদের ভিডিয়ো দেখিয়ে প্রতিপক্ষ দলের দুর্বলতা এবং শক্তি সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করাই হরির প্রধান কাজ।
টি দিলীপ: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া ভারতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা না থাকলেও দিলীপ এক জন লেভেল-থ্রি কোচ যিনি হায়দরাবাদ রঞ্জি এবং ইন্ডিয়া এ দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
দয়ানন্দ গরানী: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের থ্রোডাউন প্রোফেশনাল হিসাবে আছেন দয়ানন্দ। দয়ানন্দ কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন। থ্রো-ডাউন নিয়ে পড়াশোনা করার পর তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ রঞ্জি দলের থ্রোডাউন স্পেশালিস্ট হিসাবে কাজ করেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে গরানী ২০২০ সালের আইপিএলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাব দলের সঙ্গেও কাজ করেছেন।
চার্লস মিনজ়: ভারতীয় দলের স্বাস্থ্যরক্ষার ভার রয়েছে জেনারেল ফিজিশিয়ান চার্লস মিনজ়ের উপর। পুণের বাসিন্দা চার্লস চিকিৎসক হিসাবে ভারতীয় দলের সফরসঙ্গী হয়েছেন। এর আগে আইপিএল এবং প্রো কাবাডি লিগেও চিকিৎসা পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। ২০২০ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (আরসিবি) দলের সঙ্গে কাজ করেছেন চার্লস।
সোহম দেশাই: নন প্লেয়িং দলে স্ট্রেংথ কোচ হিসাবে রয়েছেন সোহম। স্ট্রেংথ কোচ হিসাবে খেলোয়াড়রা কতটা ফিট আছেন তা দেখাই হবে তাঁর প্রধান কাজ। খেলোয়াড়রা বিশ্বকাপ চলাকালীন কী কী খাবার খাবেন তা-ও ঠিক করবেন তিনি।
প্যাডি আপটন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের মানসিক কোচ প্যাডি। দ্রাবিড়ের অনুরোধে আপটনকে দলে নিয়েছিল বিসিসিআই। ২০১১ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সঙ্গেও আপটন যুক্ত ছিলেন। আপটনের প্রধান কাজ, খেলোয়াড়দের মানসিক স্থিতি ঠিক আছে কি না তা দেখা।
রাজলক্ষ্মী অরোরা: বিসিসিআইয়ের মিডিয়া প্রযোজক হিসাবে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে বিশ্বকাপ সফরে গিয়েছেন রাজলক্ষ্মী। তাঁর কাজ, বিসিসিআইয়ের ওয়েবসাইটে দলের বিভিন্ন ভিডিয়ো আপলোড করা। এ ছাড়াও বিশ্বকাপ সফরে গিয়ে ভারতীয় দলের খেলোয়াড়দের সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থাও তিনিই করবেন।
কমলেশ জৈন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের প্রধান ফিজিয়োথেরাপিস্ট হিসাবে আছেন কমলেশ জৈন। জৈন এর আগে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং আরসিবির হয়ে কাজ করেছেন।
মৌলিন পারিখ: নন প্লেয়িং দলের সদস্য হিসাবে ভারতীয় দলের মিডিয়া ম্যানেজার হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সফরে গিয়েছেন মৌলিন পারিখ। বিশ্বকাপ চলাকালীন দলের সমস্ত তথ্য সংবাদমাধ্যমে পাঠানোর দায়িত্বে রয়েছেন এই সাংবাদিক। পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠকের তদারকির দায়িত্বেও তিনিই আছেন।
নুয়ান সেনাভিরাতনে: দলের থ্রোডাউন স্পেশালিস্ট হিসাবে কাজ করছেন শ্রীলঙ্কার নুয়ান সেনাভিরাতনে। ৪২ বছর বয়সি সেনাভিরাতনে ২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ফিল্ডিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন।
যোগেশ পারমার: ভারতীয় দলে সহকারী ফিজিয়োথেরাপিস্ট হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন যোগেশ পরমার। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে যোগেশ অনেক দিন ধরেই যুক্ত। যোগেশের প্রধান দায়িত্ব যে সব বোলারদের লেগেছে, তাঁদের শরীরে দিকে বিশেষ নজর রাখা।
রবীন্দ্র দোইফোদে: নন প্লেয়িং দলে সিকিউরিটি লিয়াজোঁ অফিসার হিসাবে রয়েছেন মুম্বইয়ের অবসরপ্রাপ্ত এসিপি রবীন্দ্র দোইফোদে। দোইফোদের কাজ খেলোয়াড়দের বিভিন্ন অবাঞ্ছিত বিষয় থেকে নিরাপদ রাখা।