কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী। — ফাইল চিত্র।
পটনায় তৃণমূলের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অস্বস্তি ঢাকতে ‘বিয়ে বাড়ি’ তত্ত্ব খাড়া করলেন অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভার দলনেতা অধীর রবিবার বলেন, ‘‘আমাকে যদি কেউ কোনও বিয়ে বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানায়, আর সেই বিয়ে বাড়িতে আমার শত্রুকেও আমন্ত্রণ জানায়, তাহলে কি আমি ওই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাব না?’’
অধীরের এই মন্তব্য শুনেই আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। অধীরের বক্তব্যকে কটাক্ষ করে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই জন্যই কি রাহুল গান্ধীকে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন লালুপ্রসাদ যাদব! রাজনীতি ছেড়ে রাহুলকে সংসারী হতে বলছেন লালুপ্রসাদ। আর এখানে বৈঠককে বিয়েবাড়ি বলছেন অধীর চৌধুরী। আসলে ভোট এলেই প্রতিবার এই রকম প্রাণহীন চঞ্চলতা দেখা যায়। কিন্তু প্রেমহীন ভালবাসা কখনও সুখের সংসার বানাতে পারে না। তবে যা খুশি হোক, এ সব নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নেই। ২০২৪ সালের ১৫ অগস্ট আবার লাল কেল্লা থেকে জাতিকে সম্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’
প্রসঙ্গত, বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠকে যোগদান করতে গিয়ে এক মঞ্চে থাকতে হয়েছে রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সীতারাম ইয়েচুরিকে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডি (ইউ) নেতা নীতীশ কুমারের ডাকে আয়োজিত এই বৈঠকে যোগদানের পর থেকেই সমাজমাধ্যমে গেরুয়া শিবিরের আক্রমণে মুখে পড়ে তৃণমূল-কংগ্রেস-সিপিএম। তাঁদের ব্যাখ্যায়, বাংলায় কুস্তি করলেও আসলে এই তিন দল দিল্লিতে দোস্তি করে। বিজেপির এমন মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস-সহ বামদলগুলি।
রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’-এ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা । সেই সাংবাদিক বৈঠকে বার বার পটনার বৈঠক নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল তাঁকে। সেই বৈঠকে তৃণমূল নেত্রীর পাশেই দেখা গিয়েছে এআইসিসি সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ রাহুলকে। এমন ছবির ফ্রেম কি রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের জন্য অস্বস্তি তৈরি করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে বহরমপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘পটনায় নীতীশ কুমারের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। এতে কোনও বিতর্ক থাকতে পারে না। কেন এই বৈঠকে যোগদানের বিষয়টি নিয়ে এত প্রশ্ন উঠছে আমরা জানা নেই।’’ এরপরেই ‘বিয়ে বাড়ি’ তত্ত্বটির উল্লেখ করেন তিনি।
আর অধীরের এমন মন্তব্যকে হাতিয়ার করে পটনার বৈঠককে বিয়ে বাড়ি বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবির আগাগোড়াই এই বৈঠক নিয়ে নানা আক্রমণ শানিয়ে আসছিল। আর অধীরের এমন মন্তব্য যেন তাঁদের কাছে সেই আক্রমণ তীব্রতর করার সুযোগ দিয়েছে বলেই মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।