রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। — ফাইল চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হচ্ছে ২৭ মার্চ। তার পরেই যে কোনও ধরনের অনুষ্ঠানে বাজানো যাবে মাইক। আর তখনই মুর্শিদাবাদ জেলার সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে দলের নেতাদের এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন কোনও জেলাসফরে যান না মুখ্যমন্ত্রী। তা ছাড়া, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় সরকারি বা রাজনৈতিক কোনও অনুষ্ঠানেই মাইকের ব্যবহার করা যায় না। তাই পরীক্ষা শেষে মাইকের ব্যবহার শুরু হলে মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ জেলায় এসে যে কোনও ধরনের সভায় অংশ নিতে পারবেন তিনি।
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের ধারণা ছিল, সাগরদিঘিতে হারের পর মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মুর্শিদাবাদ আসবেন। এ বার তাঁদের সেই ভাবনা সত্যি করে মুর্শিদাবাদ জেলায় যাওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা। তবে সেখানে গিয়ে প্রশাসনিক না রাজনৈতিক সভা করবেন তিনি, তা অবশ্য স্পষ্ট নয় জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী এলে সাংগঠনিক ভাবে দল চাঙ্গা হবে বলেই মনে করছেন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতারা। মুর্শিদাবাদ জেলার এক তৃণমূল বিধায়ক জানান তাঁরা ‘দিদি’কে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তিনি তাতে সায়ও দিয়েছেন। ওই বিধায়কের কথায়, ‘‘সাগরদিঘিতে অপ্রত্যাশিত হারের পর স্বাভাবিক ভাবে দল একটু ভাবনায় পড়েছিল। কিন্তু রবিবারের বৈঠকে পর তিনি মুর্শিদাবাদ আসবেন, এই খবরে নেতারাই নয়, কর্মীরাও চাঙ্গা হয়েছে। এখন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই তাঁর আগমন সূচি তৈরি হবে বলেই জানতে পেরেছি।’’
মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জোর ধাক্কা খেয়েছে শাসকদল তৃণমূল। গত বছর ২৭ ডিসেম্বর সাগরদিঘির বিধায়ক তথা মন্ত্রী সুব্রত সাহা প্রয়াত হন। তাঁর মৃত্যুর পর ২২ জানুয়ারি সাগরদিঘিতে গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা ছিল, উপনির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই সাগরদিঘিতে এই বৈঠক করেছিলেন মমতা। কিন্তু উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায় তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে পিছনে ফেলে জিতেছেন বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। এর পরেই হারের কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গড়ে সাগরদিঘির নিয়ে একটি রিপোর্ট তলব করেন মমতা। গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সাগরদিঘি নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়েছেন। ওই রিপোর্টে হারের ২৫টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।
শুক্রবার কালীঘাটের বৈঠকেও সাগরদিঘির ফলে আলোকপাত করেছেন মমতা। আর রবিবার সেই ফল নিয়ে জেলা নেতৃত্বকেও বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আপাতত বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দিনক্ষণ ঘোষণার অপেক্ষায় জেলা তৃণমূলের নেতারা।