কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সাতসকালে সিবিআই হানা। রবিবার সকালে সিবিআইয়ের একটি দল চেতলায় ফিরহাদের বাড়িতে পৌঁছয়। বাড়ির ভিতর ঢুকে তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। বাইরে দাঁড়িয়ে বাড়ি ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সশস্ত্র জওয়ানেরা। কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
ফিরহাদের বাড়ির সামনে জমায়েত করেছেন তাঁর অনুগামীরা। বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন অনেকে। উঠছে কেন্দ্রীয় সরকার-বিরোধী স্লোগান। তাঁদের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই এই সিবিআই হানা।
ফিরহাদের বাড়ির সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ফিরহাদ বাড়িতেই রয়েছেন বলে খবর। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা ভিতরে ঢুকতে চাইলে সিআরপিএফ জওয়ানেরা বাধা দেন। কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুর-নিয়োগ মামলায় বাড়িতেই মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
সিবিআই সূত্রে খবর, রবিবার সাতসকালে প্রচুর সংখ্যক সিআরপিএফ জওয়ান সঙ্গে নিয়ে নিজাম প্যালেস থেকে বেরোন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা। সোজা ঢোকেন ফিরহাদের বাড়িতে। অন্য দিকে, সিবিআইয়ের একটি দল কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের ভবানীপুরের বাড়িতেও হানা দিয়েছে। আরও কয়েকটি পুরসভার চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়েছে সিবিআই। হানা দেওয়া হয়েছে কাঁচরাপাড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের বাড়িতে। হালিশহরেও গিয়েছে সিবিআই।
বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফিরহাদের কন্যা প্রিয়দর্শিনী হাকিম। তাঁকেও ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। দরজায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘ ক্ষণ সিআরপিএফ জওয়ানদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলে প্রিয়দর্শিনীর। পরে তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।
ফিরহাদের বাড়ির সামনে আসেন তাঁর আইনজীবী গোপাল হালদারও। তাঁকেও ঢুকতে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। আইনজীবী জানান, তাঁর প্রবেশাধিকার রয়েছে। সিআরপিএফ জওয়ানেরা তাঁকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। পরে জানিয়ে দেওয়া হয়, আপাতত বাড়িতে তিনি ঢুকতে পারবেন না।
এর আগে রাজ্যের আর এক মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। পুর-নিয়োগ মামলায় ৫ অক্টোবর রথীন ঘোষের বাড়িতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। গভীর রাত পর্যন্ত সেই তল্লাশি চলেছিল। সাড়ে ১৯ ঘণ্টা পর রাত পৌনে ২টো নাগাদ তদন্তকারীরা রথীনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।
শুধু রথীন নন, একই দিনে ১০ থেকে ১২টি দলে ভাগ হয়ে বরাহনগর, সল্টলেক-সহ মোট ১২টি জায়গায় হানা দিয়েছিল ইডি। কামারহাটি পুরসভার তৃণমূলের পুর চেয়ারম্যান গোপাল সাহার অমৃতনগরের বাড়ি, বরাহনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিকের বাড়ি এবং টিটাগড়ের প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভাতেও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা হাই কোর্টে সেই মামলা উঠলে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তের ভার দেয় আদালত। তার পর থেকেই সক্রিয় ইডি এবং সিবিআই।