গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধের তৎপরতা। ছবি: রয়টার্স।
ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে সাধারণ মানুষদের ধরে ধরে বন্দি করছে প্যালেস্তেনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তাদের হাতে বন্দি হচ্ছেন ইজ়রায়েলী সেনা জওয়ান। এমনকি, বিদেশিরাও রেহাই পাচ্ছেন না। ইজ়রায়েলে অবস্থিত নেপালের দূতাবাস থেকে সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানানো হয়েছে, হামাসের হাতে ১৭ জন নেপালি বন্দি। সাত জন হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন। ভারতের বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই ইজ়রায়েলে যাওয়া এবং সেখান থেকে ফেরার সমস্ত বিমান বাতিল করে দিয়েছে।
পশ্চিম এশিয়ায় পুরোদস্তুর যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। হামাসের হামলার পর শনিবারই ইজ়রায়েল সরকার ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করে দিয়েছিল। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘‘যুদ্ধে আমরাই জিতব।’’ তার পর থেকে দু’পক্ষের মুহুর্মুহু হামলায় বিপর্যস্ত ইজ়রায়েল, প্যালেস্তাইন। শুধু শনিবার সকালেই হামাসের তরফে ইজ়রায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ করে পাঁচ হাজার রকেট ছোড়া হয়েছে। পাল্টা দিয়েছে ইজ়রায়েলও। এক দিনের লড়াইয়ে ইজ়রায়েলে ৪০০-র বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন।
বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতা ইজ়রায়েলে হামাস বাহিনীর আক্রমণের কড়া সমালোচনা করেছেন। ভারত সরকারও ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে এই কঠিন সময়ে। সমাজমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তা, ‘‘ইজ়রায়েলের উপর জঙ্গি আক্রমণ হওয়ার সংবাদ পেয়ে আমি বিস্মিত। নিরীহ যাঁদের প্রাণ গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের প্রতি আমাদের প্রার্থনা রইল। এই কঠিন সময়ে আমরা ইজ়রায়েলের পাশে আছি।’’
আল জাজিরার রিপোর্ট অনুযায়ী, ইজ়রায়েলি সেনা এবং সাধারণ নাগরিককে বন্দি করে তাঁদের ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করছে হামাস। যদিও সেই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। হামাসের তরফে মুখপাত্র খালেদ কাদোমি জানান, প্যালেস্তাইনের উপর দীর্ঘ দিনের নৃশংসতার বদলা নেওয়া হচ্ছে। প্যালেস্তেনীয় ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলের সেই অত্যাচার বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গোড়া থেকেই হামাস এবং আর একটি প্যালেস্তেনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘প্যালেস্তাইন ইসলামিক জিহাদ’ (পিআইজে)-এর সঙ্গে ধারাবাহিক সংঘর্ষ চলছে ইজরায়েলি সেনার। সে সময় থেকেই প্রবেশপথগুলি বন্ধ করে গাজাকে কার্যত অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইজ়রায়েল সেনার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলায় বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যুও হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাত থেকে ‘প্রত্যাঘাত’ শুরু করে হামাস বাহিনী। মুহুর্মুহু রকেট হামলার পাশাপাশি ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে আক্রমণ করা হয়। তার পরেই শুরু হয় যুদ্ধ।