অভিযোগ, তিন-চার বছর চাকরি করার পরেও দেখা যাচ্ছে, কোনও শিক্ষক স্থায়ীপদ পাচ্ছেন না। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ পেলেও শিক্ষকদের স্থায়ী পদ দেওয়া হচ্ছে না বা অনেক দেরিতে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ‘প্রোবেশন’-এই থেকে যাচ্ছেন। এর ফলে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে অনেক সময়েই বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। এই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মন্তব্য, রাজ্য এই নিয়ে নীতি তৈরি করুক। এটা দীর্ঘ দিন চলতে পারে না। এই বিষয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)-র বক্তব্যও শুনতে চেয়েছে আদালত।
জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিল (ডিপিএসসি) প্রাথমিকে শিক্ষকদের নিয়োগপত্র দেয়। অভিযোগ, তিন-চার বছর চাকরি করার পরেও দেখা যাচ্ছে, কোনও শিক্ষক স্থায়ীপদ (কনফারমেশন) পাচ্ছেন না। ওই শিক্ষকেরা বদলি বা কোনও সুবিধা চাইলে অহেতুক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের স্থায়ীকরণে এই বিলম্ব নিয়েই অসন্তুষ্ট হাই কোর্ট। এই নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়েছেন বিচারপতি। তিনি রাজ্যের এজি কিশোর দত্তকে এজলাসে ডেকে পাঠান। সেখানে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি। এই বিষয়ে কোনও নীতি তৈরি করা যায় কি না, তা নিয়ে এজির বক্তব্য জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। এজি জানিয়েছেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের থেকে জেনে এসে পরের শুনানিতে জানাতে পারবেন। বিষয়টি নিয়ে কোনও নীতি তৈরি করা যায় কি না তা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবের থেকেও জানতে বলেছেন বিচারপতি।
আদালত চায়, আগামী দিনে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের সমস্ত তথ্য জানিয়ে একটি পোর্টাল হোক। রাজ্য সেই পোর্টাল তৈরি করুক। এক জন প্রাথমিক শিক্ষক কবে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কী, কোন বিষয়ের তিনি শিক্ষক, তাঁর ঠিকানা ইত্যাদি সব যাতে পোর্টালে থাকে, সেই পরামর্শ দিয়েছে আদালত।
এই সংক্রান্ত বিষয়ে হাই কোর্টে কয়েকটি মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ে চাকরিতে স্থায়ীকরণ করে জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিল। ওই কাউন্সিল গঠনের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু এখন অনেক জেলায় প্রক্রিয়া মেনে কাউন্সিল গঠন হয়নি। প্রাথমিকের স্কুলে চাকরিতে স্থায়ীকরণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। আবার স্থায়ী শিক্ষকদের বদলি নিয়ে দুর্নীতির হচ্ছে। সব মিলিয়ে পরিকল্পনামাফিক এই পুরো প্রক্রিয়ায় করছে রাজ্য সরকার।’’ এ বার এই নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য শুনতে চাইল হাই কোর্ট।