মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাইরন বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন সাগরদিঘির কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন, ১১ মে একটি বিশেষ কাজে তিনি কলকাতায় যাচ্ছেন। যদি সম্ভব হয়, সেই দিনই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। যা নিয়েই জল্পনা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। বাইরন অবশ্য দলবদলের বিষয়টি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এখনই এ ব্যাপারে কিছু ভাবছি না!’’
মুর্শিদাবাদে ‘জনসংযোগ যাত্রা’র সভামঞ্চ থেকে বাইরনকে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক। সেই ব্যাপারেই সাগরদিঘির কংগ্রেস বিধায়কের যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, জনপ্রতিনিধি হিসাবে তিনি অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। তাঁর কথায়, ‘‘আমি জনপ্রতিনিধি হিসাবে উন্নয়নের প্রশ্নে এলাকার মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করব, এটাই তো স্বাভাবিক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আমি ওঁকেও ধন্যবাদ জানাব।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কবে তাঁর সাক্ষাৎ হতে পারে, সে প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বাইরন জানান, তিনি ১১ মে একটি বিশেষ কাজে কলকাতা যাবেন। যদি সম্ভব হয়, তা হলে সেই দিনই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছুক।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ভোটপ্রচারে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে ‘আঁতাঁত’-এর অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। পাল্টা বিজেপি দাবি করেছিল, বাইরন ভোটে জিতলে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন। সেই জল্পনাই কি সত্যি হতে চলেছে, তার প্রেক্ষিতে কংগ্রেস বিধায়ক বলেন, ‘‘দলবদলের কোনও প্রশ্নই নেই। আমি এখনই এ সব ব্যাপার নিয়ে ভাবতে চাইছি না।’’
বাইরনের এই মন্তব্যই পুরনোর বিতর্ককে উস্কে দিল বলে মনে করছেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে সাগরদিঘির ভোটে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহা বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছিলাম, জেতা মাত্রই বাইরন তৃণমূলে যোগ দেবেন। এতটা দেরি দেখে অবাক হচ্ছি! ওঁর তৃণমূলে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। কারণ, ওঁকে ওই শর্তেই তৃণমূল জিতিয়েছে।’’
শনিবার রানিনগরের কর্মসূচি থেকে অভিষেক বাইরনের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সাগরদিঘিতে কংগ্রেস জিতেছে। আমি অনুরোধ করব, সাগরদিঘিতে যাতে উন্নয়ন হয়, তার জন্য বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুন। কেউ বারণ করছে না। যেখানে আমরা জিতেছি, সেখানেও পরিষেবা দিয়েছি। যেখানে হেরেছি, সেখানেও পরিষেবা দিয়েছি।’’ তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে বিঁধেছেন অভিষেক। তিনি বলেছেন, ‘‘অধীর চৌধুরীকে কোনও দিন দেখবেন না, শুভেন্দু, সুকান্ত, দিলীপকে আক্রমণ করছেন বা বিজেপিকে আক্রমণ করছেন!’’
ঘটনাচক্রে, এর পরেই মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন বাইরন। এ ব্যাপারে অধীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। তবে এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘বিধায়কের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা হতে পারে, কথাও হতে পারে। এর সঙ্গে দলবদলের কী সম্পর্ক? তৃণমূল সাংসদরা কি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন না?’’