জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।
রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যে দিন গ্রেফতার হয়েছিলেন, সে দিন প্রথম এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র সিজিও দফতরে ডেকে জেরা করা হয়েছিল। সেই থেকে চার দিন সিজিও দফতরে হাজিরা দিলেন মন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ অমিত দে। ইডি সূত্রে খবর, জ্যোতিপ্রিয়ের দফতরে বাকিবুর ছাড়া আর কারা আসতেন, কী করতেন, মঙ্গলবার এ সব অমিতকে জিজ্ঞেস করতে পারেন ইডির আধিকারিকেরা। জ্যোতিপ্রিয়ের মুখোমুখি বসিয়েও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। ইডি দফতরে হাজির হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়ের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাস। তাঁর হাওড়ার বাড়িতেও চলেছিল তল্লাশি।
মঙ্গলবার, চতুর্থ দিন ইডির দফতরে হাজিরা দিলেন অমিত। সোমবার রাতেই হাসপাতাল থেকে জ্যোতিপ্রিয়কে হেফাজতে নিয়েছে ইডি। আদালতের নির্দেশে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ দিন ইডির হেফাজতে সিজিও কমপ্লেক্সে থাকবেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, মঙ্গলবার তাঁর মুখোমুখি বসিয়ে অমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, বাকিবুর ছাড়া বালুর দফতরে কারা আসতেন, কী ধরনের কাজ চলত, বাকিবুরের সঙ্গে জ্যোতি কী ধরনের কাজ করতেন, এ সবই জিজ্ঞেস করা হতে পারে মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’-কে।
গত বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়ের সল্টলেকের দু’টি বাড়ি, নাগেরবাজারের পৈতৃক বাড়ির পাশাপাশি অমিতের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল ইডি। তখন নাগেরবাজারে অমিতের তিনটি ফ্ল্যাট তালাবন্ধ ছিল। অমিত সপরিবার পুরীতে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। এর পর ভুবনেশ্বর থেকে তিনি বিমান ধরে ফিরে আসেন। বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে আসে ইডি। তার পর ফ্ল্যাটের দরজা খুলিয়ে চলে তল্লাশি। তখন জানা যায়, অমিত মন্ত্রী ‘আপ্তসহায়ক’। যদিও অমিত নিজে সে কথা অস্বীকার করেছেন।
সোমবার অমিত দাবি করেন, তিনি আদৌ মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক নন। তিনি মন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ এবং তাঁর অফিসে কাজ করতেন। ছোট থেকে জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে একই পাড়ায় বড় হয়েছেন বলেও দাবি করেন অমিত। তিনি দাবি করেন, সেই সূত্রে ‘মন্ত্রীর কোটায়’ খাদ্য দফতরে চাকরি পেয়েছেন। সেই কারণেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। অমিত জানান, তিনি যা জানেন, ইডিকে সবই জানিয়েছেন।
জ্যোতিপ্রিয়ের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎকেও একাধিক বার তলব করেছে ইডি। অভিজিৎ এবং অমিত দু’জনকেই ইডি মঙ্গলবার দফতরে ডেকে পাঠিয়েছে। তাঁদের এত দিন ধরে জেরা করে যে তথ্য উঠে এসেছে, সেগুলিই মন্ত্রীর সামনে মঙ্গলবার রাখা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে চলবে জিজ্ঞাসাবাদ। ইডি সূত্রে খবর, প্রয়োজনে অমিত এবং অভিজিতের মুখোমুখি বসিয়ে জ্যোতিপ্রিয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।