জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
রেশন বণ্টন ‘দুর্নীতি’ মামলায় ধৃত রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে জেরা করা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাঁকে জেরা করছেন ইডি আধিকারিকেরা। ১০ দিন ইডি হেফাজতে থাকতে হবে জ্যোতিপ্রিয়কে। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, মন্ত্রীকে তাঁর আপ্তসহায়ক অমিত দে-র বয়ানের ভিত্তিতে জেরা করা হতে পারে। প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের বয়ানও উঠে আসতে পারে জেরায়। ওই দু’জনকেই মঙ্গলবার আবার তলব করেছে ইডি।
গত কয়েক দিনে বার বার ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছেন অমিত। কখনও নথিপত্র নিয়ে এসেছেন, কখনও এসেছেন খালি হাতে। সোমবার অমিত দাবি করেন, তিনি আদৌ মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক নন। তিনি মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর অফিসে কাজ করতেন। ছোট থেকে জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে একই পাড়ায় বড় হয়েছেন বলেও দাবি করেন অমিত। সেই কারণেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। অমিত জানান, তিনি যা জানেন, ইডিকে সবই জানিয়েছেন।
জ্যোতিপ্রিয়ের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎকেও একাধিক বার তলব করেছে ইডি। অভিজিৎ এবং অমিত দু’জনকেই ইডি মঙ্গলবার দফতরে ডেকে পাঠিয়েছে। তাঁদের এত দিন ধরে জেরা করে যে তথ্য উঠে এসেছে, সেগুলিই মন্ত্রীর সামনে মঙ্গলবার রাখা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে চলবে জিজ্ঞাসাবাদ। ইডি সূত্রে খবর, প্রয়োজনে অমিত এবং অভিজিতের মুখোমুখি বসিয়েও জ্যোতিপ্রিয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার রেশন মামলায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। ভোর সাড়ে ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ম্যারাথন তল্লাশি চলে মন্ত্রীর সল্টলেকের দু’টি বাড়িতে। তার পর তাঁকে রাতেই সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় ইডি। সকালে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত মন্ত্রীকে আদালতে হাজির করানো হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি সুগারের রোগী। আদালত থেকে জ্যোতিপ্রিয়কে ভর্তি করানো হয় বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে সোমবার তাঁকে ছাড়া হয়েছে। তার পরেই ইডির হেফাজতে গিয়েছেন মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়ের পাশাপাশি অমিতের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। নাগেরবাজারের দু’টি অ্যাপার্টমেন্টে অমিতের মোট তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে একটি অ্যাপার্টমেন্টের নাম ‘ভালবাসা’। অন্যটির নাম ‘পারুল’। দু’টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ৫০০-৬০০ মিটারের দূরত্ব। তবে ‘পারুল’-এর ফ্ল্যাটে এখন আর থাকেন না অমিত। ‘ভালবাসা’ অ্যাপার্টমেন্টের দু’টি ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। সেখানে প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থা হানা দিয়েছিল অভিজিতের বাড়িতেও। তাঁর বাড়ি থেকেই মিলেছিল মেরুন ডায়েরি। সে সব প্রসঙ্গ মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসতে পারে।