আলু গুদামজাত রাখার সময়সীমা বৃদ্ধির নোটিস দিল রাজ্য সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের হিমঘরগুলিতে আলু সংরক্ষণের সময়সীমা এক মাস বৃদ্ধি করল রাজ্য সরকার। শনিবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর। তাতে জানানো হয়েছে হিমঘরগুলিতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাড়তি ওই এক মাসের জন্য নির্দিষ্ট হারে বর্ধিত ভাড়া গুনতে হবে। অন্য দিকে, ভিন্রাজ্যে আলু রফতানি নিয়ে জটিলতা না কাটায় সোমবার রাত থেকে ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় আলুর দাম বেড়ে গিয়েছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হিমঘরে আলু সংরক্ষণ করতে পারেন সংরক্ষণকারীরা। চলতি বছরের নভেম্বরের গোড়াতেই ওই মোতাবেক একটি নোটিস দিয়েছিল কৃষি বিপণন দফতর। তাতে বলা হয়, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে হিমঘর থেকে সমস্ত আলু সরিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে হিমঘর খালি না হওয়ায় এবং নতুন ফসল না ওঠায় হিমঘরে আলু সংরক্ষণের সময়সীমা আরও এক মাস বৃদ্ধি করা হল। শনিবার খাদ্য ভবন থেকে জারি হওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আলু সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষণকারীদের ভাড়া দিতে হবে। উত্তরবঙ্গের হিমঘরগুলির জন্য কুইন্টাল পিছু ১৯ টাকা ১১ পয়সা এবং দক্ষিণবঙ্গের হিমঘরগুলির জন্য ১৮ টাকা ৬৬ পয়সা বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে সংরক্ষণকারীদের।
যদিও আলু সংরক্ষণের সময়সীমা বৃদ্ধিতেও তাঁরা খুব একটা স্বস্তিতে নেই বলে জানাচ্ছেন সংরক্ষণকারীরা। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য কমিটির উপদেষ্টা বিভাস দে বলেন, ‘‘গত মরসুমে রাজ্যে আলু উৎপাদন ভাল হয়েছিল। ফলে অধিকাংশ হিমঘরেই প্রায় সর্বাধিক ক্ষমতায় আলু সংরক্ষণ করা হয়েছিল। নভেম্বরের শেষেও হিমঘরগুলিতে যে পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে, তাতে ডিসেম্বরের শেষে হিমঘরগুলি আদৌ খালি করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।’’
অন্য দিকে, আলু রফতানির ক্ষেত্রে রাজ্যের সীমানা জটিলতার অভিযোগে সোমবার রাত থেকে আবারও ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। তারা জানিয়েছে, সোমবারের মধ্যে সীমানায় পুলিশি হয়রানি বন্ধ না করলে এবং আলুবোঝাই গাড়ির জন্য সীমানা শিথিল না করলে আবার ধর্মঘট শুরু হবে। তার ফলে মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যের বাজারগুলিতে আলুর জোগান কমতে শুরু করবে। সে ক্ষেত্রে সাময়িক ভাবে হলেও শীতের মরসুমে আলুর দাম বাড়তে পারে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য কমিটির উপদেষ্টার কথায়, ‘‘যে পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে তা রাজ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। তা সত্ত্বেও রাজ্যের সীমানায়, এমনকি জেলার সীমানাতেও আলুবোঝাই গাড়ি আটকে দিচ্ছে পুলিশ। ফলে ভিন্রাজ্যে আমরা আলু পাঠাতে পারছি না। ভিন্রাজ্যে আলুর দাম বাবদ আমাদের বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। এই অবস্থায় হঠাৎ করে ওই রাজ্যগুলিতে আলু পাঠানো বন্ধ করে দিলে আমাদের ওই বকেয়া অনাদায়ী থেকে যাবে। সে ক্ষেত্রে আলুচাষি থেকে সংরক্ষণকারী, সকলেই বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বেন।’’