নতুন রঙে রাঙানো হল ভাবুক পঞ্চায়েত ভবন। —নিজস্ব চিত্র।
সাদা-নীল মুছে দিয়ে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত কার্যালয়ের রং হল গেরুয়া। শনিবার থেকে তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে মালদহের ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতে। তৃণমূলের অভিযোগ, পঞ্চায়েত কার্যালয়কে পার্টি অফিস করে ফেলেছে পদ্মশিবির। পাল্টা বিজেপির যুক্তি, সমস্ত সরকারি অফিসে সাদা-নীল রং করা কোন প্রশাসনিক নিয়ম?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো ভাবুক পঞ্চায়েত ভবনের রং-ও এত দিন নীল-সাদা ছিল। আচমকা সেই ভবন রাঙানো হল গেরুয়া রঙে। বস্তুত, গত কয়েক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট এলাকা বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। পঞ্চায়েত ভোটে মালদহ জুড়ে যখন সবুজ ঝড় উঠেছিল, তখনই ভাবুক নিজেদের দখলে রেখেছে পদ্মশিবির। একক ভাবে ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করে তারা। ১৯ আসনের ওই পঞ্চায়েতে বিজেপির সদস্যসংখ্যা ১১ জন। তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা সাত, বাকি একটি নির্দলের। এখন ভবনের রং বদল নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পঞ্চায়েতকে পার্টি অফিস করতে চাইছে বিজেপি। ইতিমধ্যে এ নিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করছেন। গেরুয়া রং পরিবর্তন করে আগের মতো সাদা-নীল না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঘাসফুল সদস্যেরা। তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের কথায়, ‘‘যদি গেরুয়া রং করতেই হয়, তবে রাজ্য থেকে সমস্ত টাকা নেওয়া বন্ধ করে দিন পঞ্চায়েত প্রধান।’’ পাল্টা বিজেপির সদস্যেরা বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত স্বশাসিত। তাই সেখানে কেউ রং নির্ধারণ করে দিতে পারবে না। তৃণমূল সরকারি জায়গায় নীল-সাদা রং নিয়ে রাজনীতি করে। কিন্তু ভাবুক অঞ্চলে মানুষের জন্য বিজেপি কাজ করে। পঞ্চায়েতের প্রত্যেকটি বুথে বিজেপির লিড ছিল। এখানে তৃণমূল অহেতুক রাজনীতির চেষ্টা করছে।’’
সাম্প্রতিক অতীতে খোদ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আকাশি রঙকে রাজ্যের রং হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ওই রঙের ব্যবহার হবে। কিছু দিন আগে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে এ নিয়ে মন্তব্যও করেন মমতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘দেখলাম, অনেক বিল্ডিংয়ে লাল, না হলে গেরুয়া রং লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি কিন্তু কোথাও আমার পার্টির কালার (রং) ব্যবহার করি না।’’ তার পর রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দেন, সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার বা সংস্থাকে যেন বলে দেওয়া হয় যে গেরুয়া বা লাল রাজ্যের রং নয়।