মঞ্চে গান গাওয়ার আগে কী ভাবে প্রস্তুতি নেন সোনু নিগম? ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
কখনও তাঁর সুর উচ্ছ্বাসে ভাসায়, কখনও স্তব্ধ করে দেয় অনুরাগীদের। ‘অভী মুঝ মেঁ কহীঁ…’ গানটি শুরু করলে ভিড়ে ঠাসা কনসার্টেও নেমে আসে স্তব্ধতা। আবার ‘দিওয়ানা’, ‘বিজুরিয়া’র সুরে-তালে-ছন্দে নেচে ওঠেন উপস্থিত শ্রোতারা।
গায়ক সোনু নিগম। পঞ্চাশোর্ধ্ব গায়ক দেশ-বিদেশে দাপিয়ে অনুষ্ঠান করেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টানা নাচ, গান করে মাতিয়ে রাখেন দর্শকদের। সুর নিয়েই যাঁর জীবন কাটে, তিনি সুরের সাধনা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি সুরে গাওয়ার জন্য, মঞ্চ মাতিয়ে রাখার জন্য শরীরচর্চাও করবেন? তেমনটাই কিন্তু জানালেন ‘কাল হো না হো’-সহ বহু জনপ্রিয় গানের গায়ক। সোনু জানাচ্ছেন, মঞ্চে ওঠার আগে কয়েকটি দিন জিম করেন তিনি। তাতে কী হয়? তিনি বললেন,‘‘আমার মনে হয়, ফুসফুসের জড়তা কেটে গেল।’’
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে গায়ক জানিয়েছেন মঞ্চে ওঠার বা রেকর্ডিংয়ের আগে তাঁর প্রস্তুতির কথা। সে কথা বলতে গিয়েই উঠে এসেছে শরীরচর্চার গুরুত্ব। সোনু বলেছেন, ‘‘আমি সাধারণত মঞ্চে গান গাওয়ার আগে এবং রেকর্ডিংয়ের আগে জিমে যাই। রেকর্ডিংয়ের আগে আমি ৫-৬ দিন তো জিমে যাই-ই। আমার মনে হয়, এতে আমার ফুসফুসের জড়তা কেটে গেল।’’ বরাবরই সঙ্গীতগুরুদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল গায়ক। তিনি ঈশ্বরেও বিশ্বাসী। সোনু জানান, এখনও মঞ্চ উপস্থাপনার আগে তিনি ঈশ্বরকে এবং সঙ্গীতগুরুদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
কিন্তু সোনু যে গান শুরুর আগে শরীরচর্চা করেন, এতে কী লাভ হয়?
ফিটনেস প্রশিক্ষক পবন বেহল বলছেন, ‘‘নিয়মিত এবং যথাযথ শরীরচর্চায় পেশির কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়, ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে, সামগ্রিক ভাবেই শরীর ভাল থাকে।’’
কী কী লাভ হয় শরীরচর্চায়?
কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ়, যেমন দৌড়, সাইক্লিং, রোয়িং-এর মতো কসরতে শরীরে অক্সিজেন চলাচল ভাল হয়। হার্টে অক্সিজেন যায় বেশি। শ্বাসযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
শরীরচর্চার ফলে ফুসফুসে, ভোকাল কর্ডে অক্সিজেন সরবরাহ ভাল হয়, যা দম ধরে রাখার ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। গলার জোর বাড়ায়, যা গান গাওয়ার জন্য জরুরি।
ফিটনেস প্রশিক্ষকের কথায়, শরীরচর্চার ফলে এন্ডরফিনের মতো হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। উদ্বেগ কমাতে এই হরমোনের ভূমিকা থাকে। মঞ্চ অনুষ্ঠানের জন্য একজন শিল্পীর মাথা, মন নিয়ন্ত্রণে থাকাও জরুরি। শরীরচর্চা এ ভাবেও কিন্তু সাহায্য করে।
শ্বাসযন্ত্রের ব্যায়াম
পবনের কথায়, শ্বাসযন্ত্রের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বেশ কিছু ব্যায়াম কার্যকর। নির্দিষ্ট ছন্দে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, ধরে রাখার মতো ব্যায়াম এ ক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকর। নাকের সাহায্যে শ্বাস নিয়ে ঠোঁট অল্প ফাঁক করে তা ধীরে ছাড়ার ব্যায়ামও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি সঙ্গীতচর্চায় বিভিন্ন স্কেল, নীচের ‘নোট’ এবং উপরের ‘নোটে’ গান গাওয়ার অভ্যাসও গলার জোর বাড়ায়।