(বাঁ দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
এক বছর পর ফের পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্রে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেহালার তৃণমূল সূত্রের খবর, সোমবার, ১৪ অগস্ট সন্ধ্যায় বেহালায় তৃণমূলের আয়োজিত ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইড’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে গত বছর ওই দিনেই বেহালায় এসে সভা করে গিয়েছিলেন তিনি। ফের আসছেন এক বছর পরে।
তবে এক বছর আগের সভায় পার্থের নাম এক বারের জন্যও উচ্চারণ করেননি তাঁর নেত্রী মমতা। যদিও সভাটি হয়েছিল পার্থের ম্যান্টনের বিধায়ক কার্যালয়ের খুব কাছেই। এ বারও সভার আয়োজন সেখানেই হচ্ছে। কর্মসূচি আয়োজনের দায়িত্বে যুগ্ম ভাবে রয়েছেন বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভার তৃণমূল নেতৃত্ব।
তবে গত বছর পার্থের নাম না নিলেও বেহালা পশ্চিমের সভা থেকে তার আগেই ধৃত অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁডড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বছর ১১ অগস্ট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত। ১৪ অগস্ট বেহালার সভায় গিয়ে সেই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। পার্থ-অনুগামীদের ধারণা ছিল, বেহালা পশ্চিমের পাঁচ বারের বিধায়ক পার্থের পাশে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মমতা তা করেননি। ২৩ জুলাই গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থকে দল থেকে সাসপেন্ড করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই পার্থের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়ার প্রশ্ন ওঠেনি।
দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে মমতা এই বার্তাও দিতে চান যে, পার্থের অনুপস্থিতিতেও বেহালার প্রতি তাঁর নজর কমেনি। ক্ষমতায় আসার আগে এই ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মমতা প্রায় প্রতি বছরেই বেহালায় আসতেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সেই রীতিতে বদল এসেছিল। ঘটনাচক্রে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর ১৪ অগস্ট দিল্লি গিয়ে বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগদান করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় বেহালায় ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট’ কর্মসূচিতে যোগদান করতে যান মমতা। সেই কর্মসূচিতেই শোভনের যাবতীয় দলগত এবং বিধানসভা এলাকার দায়িত্ব তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়ে গিয়েছিলেন মমতা।
গত এক বছর ধরে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ জেলবন্দি। এই পরিস্থিতিতে বেহালার বিজেপি এবং সিপিএম একযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছে। সেই বিষয়গুলি যাতে কোনও ভাবেই লোকসভা ভোটে বেহালা পশ্চিমে কোনও ‘প্রভাব’ না-ফেলে, তা-ও নিশ্চিত করতে চান মমতা।