Canning Incident

সাগর দত্তের পর ক্যানিং হাসপাতাল, চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষোভ

মৃতের পরিবারের প্রশ্ন, কেন চিকিৎসা না করে ছেড়ে দেওয়া হল ভুবনকে? হাসপাতালে রেখে কি অক্সিজেন দেওয়া যেত না? চিকিৎসকদের গাফিলতির অভিযোগ তুলে শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন ভুবনের পরিবারের সদস্যেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:৪৯
Share:

হাসপাতালের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃতের পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি হাসপাতালে ফের চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ। এক সিভিক ভলান্টিয়ারের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতির কারণেই ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকেই হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মৃতের পরিজনেরা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম ভুবন মণ্ডল। তাঁর পরিবারের দাবি, রবিবার বিকেলে বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তখন তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা কোনও রকমে চিকিৎসা করেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ভুবনের কিছুই হয়নি।

তবে, ভুবনের স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল। অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল। হাসপাতালে রেখে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য তিনি অনুরোধও করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা সে কথায় কর্ণপাত করেননি। তাই ওই অবস্থাতেই বাধ্য হয়ে ভুবনকে বাড়ি নিয়ে যান। সোমবার ভোরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন ভুবন। পরিবারের লোকজন তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভুবনকে মৃত ঘোষণা করেন।

Advertisement

পরিবারের দাবি, ভুবন ক্যানসারে আক্রান্ত। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তবে রবিবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকদের সে কথা বলেও কোনও লাভ হয়নি। ভুবনের মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। মৃতের পরিবারের প্রশ্ন, কেন চিকিৎসা না করে ছেড়ে দেওয়া হল ভুবনকে? হাসপাতালে রেখে কি অক্সিজেন দেওয়া যেত না? চিকিৎসকদের গাফিলতির অভিযোগ তুলে শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন ভুবনের পরিবারের সদস্যেরা।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবারই রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল পানিহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। রঞ্জনা সাউ নামে এক মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। অভিযোগ, হাসপাতালে আনার পরেও রোগীর কোনও রকম চিকিৎসা হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়েছিল। শেষে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় রঞ্জনার। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান মৃতার পরিজনেরা। অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের চারতলায় উঠে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় মহিলাদের ওয়ার্ডে। এমনকি, মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। সেই ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন সাগর দত্তের জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন হাসপাতালের নার্সরাও। সোমবারও সাগর দত্ত মেডিক্যালে কর্মবিরতি চলছে। সেই আবহে আবার রাজ্যের এক সরকারি হাসপাতালে গাফিলতির অভিযোগে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement