Tangra Building Tilt

ট্যাংরায় হেলে পড়া বহুতল ভাঙার নির্দেশ এল, পর পর ঘটনায় অস্বস্তি বাড়ছে কলকাতা পুরসভার

বুধবার সকালে ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডে নির্মীয়মাণ পাঁচতলা বহুতল আচমকা এক দিকে হেলে পড়ে। পাশেই প্রায় সমান উচ্চতার আর একটি বহুতল রয়েছে। তার গায়ে কাত হয়ে পড়ে বহুতলটি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫৫
Share:

ট্যাংরার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্মীয়মাণ বহুতল হেলে পড়েছে আচমকাই। —নিজস্ব চিত্র।

বাঘাযতীনের পর ট্যাংরায় একটি বহুতল হেলে পড়েছে। ওই বহুতলটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। দ্রুত ভাঙার কাজ শুরু করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। খোদ মেয়র পারিষদের এলাকায় বহুতল হেলে পড়ায় অস্বস্তিতে পুরসভা। সেই কারণেই দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ট্যাংরা থানার তরফে ইতিমধ্যে এলাকায় মাইকিংও শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

পুরসভার নির্দেশ আসার পর ট্যাংরা থানার তরফে মাইকিং করে দুই বহুতলের বাসিন্দাদেরই সরে যেতে বলা হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকে এই বহুতল ভাঙার কাজ শুরু হবে। সেই রকম নির্দেশই এসেছে। আমরা অনুরোধ করছি, আপনারা এলাকা খালি করে দিন।’’

ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডে নির্মীয়মাণ পাঁচতলা বহুতল এক দিকে হেলে পড়ে। বুধবার সকালে সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পাশেই প্রায় সমান উচ্চতার আর একটি বহুতল রয়েছে। তার গায়ে কাত হয়ে পড়ে বহুতলটি। নির্মীয়মাণ অবস্থায় থাকায় ওই বহুতলে বাসিন্দা কেউ ছিলেন না। ছিলেন কয়েক জন রাজমিস্ত্রি। তাঁরা অবশ্য সকলেই সুস্থ আছেন। কলকাতা পুরসভার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডটি মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহার এলাকা। সেখানেই বহুতল হেলে পড়ায় পুরসভার অস্বস্তি বেড়েছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ট্যাংরার ওই এলাকায় প্রায় কোনও বহুতলই নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়নি। সবই বেআইনি ভাবে মাথা তুলেছে। এলাকার কাউন্সিলর এ বিষয়ে অবগত বলেও দাবি করছেন কেউ কেউ। বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁদের আশঙ্কা, যে কোনও মুহূর্তে বহুতলটি আরও হেলে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে পাশের বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশের মাইকিংয়ের পর আতঙ্ক আরও বেড়েছে। বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘সরে যেতে বলছে। কোথায় সরে যাব? আমাদের তো রাস্তায় নামতে হবে।’’

পুরসভা সূত্রে খবর, বুধবার দুপুরেই বহুতলটি খালি করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ওই বহুতল ভাঙার কাজ শুরুর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ‘বিল্ডিং’ বিভাগের প্রধান মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে। গত বছর তাঁর বিধানসভা এলাকা গার্ডেনরিচে একটি বহুতল ভেঙে পড়েছিল। কিছু দিন আগে বাঘাযতীনে যে বহুতলটির একতলার একাংশ ভেঙে তা হেলে পড়ে, সেটিও এক মেয়র পারিষদের এলাকা। পর পর একই ধরনের ঘটনায় পুরসভার ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। পুরসভায় যাঁরা উচ্চ পদে রয়েছেন, তাঁদের এলাকাতেই এমন ঘটনা অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। সেই কারণেই দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে খবর।

বাঘাযতীনের ঘটনার পর মেয়র পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকে দায়ী করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, বাম আমলে বেআইনি বহুতল নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হত। কলোনি এলাকার কোনও বাড়িরই সঠিক ‘প্ল্যানিং’ নেই। সেখান থেকে বাসিন্দাদের তো সরিয়ে দেওয়া যায় না। তবে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন মেয়র। তার পরেও একের পর এক বহুতল হেলে পড়ার ঘটনা ঘটছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement