হোয়াটসঅ্যাপ বিতর্কে মুখ খুললেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ঢোকার সময় হোয়াটসঅ্যাপে তাঁদের অবস্থান (লোকেশন) জানানোর কোনও নির্দেশিকা স্বাস্থ্য দফতর দেয়নি। বিতর্কের মুখে সাফ জানালেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি জানান, ওই নির্দেশ বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্টকে এই নির্দেশ প্রত্যাহারের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়ার ঠিক আগে মেডিক্যাল অফিসারদের হোয়াটসঅ্যাপ লোকেশন জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের তরফে জারি করা এমনই এক নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। আনন্দবাজার অনলাইন সর্বপ্রথম এই খবর সম্প্রচার করে। অন্য দিকে চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, এই নোটিস তাঁদের সম্মানহানি করছে। একে ‘স্বৈরতান্ত্রিক পদক্ষেপ’ বলে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। এই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এল প্রতিক্রিয়া।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, “বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডাক্তারদের মোবাইল (হোয়াটসঅ্যাপ) লোকেশন শেয়ার করার জন্য যে নির্দেশ দিয়েছেন সেটা সম্পূর্ণ ভাবে তাঁরই দেওয়া। এর সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। স্বাস্থ্য দফতর থেকে এ রকম কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।’’ তিনি এও জানান, এই বিষয়ে ওই সুপারিনটেনডেন্টের বক্তব্য জানার জন্য তাঁকে মঙ্গবারই স্বাস্থ্য ভবনে ডেকে পাঠানো হয় এবং ওই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়।
গত ১৪ মার্চ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্ট সব মেডিক্যাল অফিসারের উদ্দেশে একটি নোটিস জারি করেন বলে জানা যায়। ওই নোটিসে দেখা যায়, স্বাস্থ্য ভবনের ডিডিএইচএস-এর নির্দেশ মেনে কাজে যোগ দেওয়ার আগে প্রত্যেক মেডিক্যাল অফিসারকে নিজেদের লোকেশন হোয়াটসঅ্যাপে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেটা কাকে ‘শেয়ার’ করতে হবে, সেই নামও উল্লেখ করে দেওয়া হয়। বলা হয়, হাসতালের ওপিডি, অন কল সার্ভিস, ওটি সার্ভিস, এমারজেন্সি, এইচডিইউ, এসএনসিউ-এর মতো পরিষেবায় যুক্ত চিকিৎসকদের এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, এ হেন নোটিসে তাঁদের সম্মানহানি ঘটেছে। চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘এই নোটিস মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। অবিলম্বে এমন নোটিস প্রত্যাহার করা উচিত। চিকিৎসক কেন, কোনও পেশাতেই এমন নির্দেশিকা দেওয়া যায় না।’’ তিনি এই নির্দেশিকাকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ বলে মন্তব্য করেন।