জো বাইডেন এবং ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র।
জো বাইডেন এবং ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র।
ইউক্রেন যুদ্ধের পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করেছিল আমেরিকা। এ বার পাল্টা পদক্ষেপ করল মস্কো। মঙ্গলবার রুশ বিদেশ দফতর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানিয়েছে। রাশিয়া এবং তাঁর প্রভাব বলয়ের দেশগুলিতে আমেরিকার ওই তিন নেতার সফরের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে সেই তালিকায়।
সোমবার বিকেলে নতুন করে শুরু হয়েছিল চতুর্থ দফার শান্তি আলোচনা। কিন্তু রাত থেকেই কিভ দখলের লক্ষ্যে ‘ফাইনাল অ্যাসল্ট’ শুরু করেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। বিভিন্ন দিক থেকে শুরু হয়েছে হামলা। সেনা এবং সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি নিহতদের তালিকায় রয়েছেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। মঙ্গলবার রুশ বোমায় ফক্স নিউজের এক চিত্রসাংবাদিকের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ইউক্রেন সরকার।
যুদ্ধবিধ্বস্ত কিভে গৃহহীন বহু নাগরিক। ছবি: রয়টার্স
রুশ ফৌজের ধারাবাহিক বোমাবর্ষণ এবং ক্ষেপণাস্ত্র হানার জেরে ইউক্রেনের রাজধানী কিভে জারি হল কার্ফু। মঙ্গলবার বিকেলে প্রেসিডেন্ট ভোলাদিমির জেলেনস্কি সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে কিভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো জানিয়েছেন অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হাসপাতাল, স্কুল, দোকান-বাজারের উপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে রুশ যুদ্ধবিমান। মুহুর্মুর্হু বোমা ফেলছে শহরবাসীর উপর। এই পরিস্থিতিতে বিমানহানার ক্ষয়ক্ষতি এড়াতেই আগামী ৩৬ ঘণ্টার জন্য কার্ফু জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার যুদ্ধের ২০তম দিনে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন’ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৩০ লক্ষ ইউক্রেনীয় নাগরিক রুশ হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়েছেন। এর আগে সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক দফতর (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছিল, তখনও পর্যন্ত ২৭ লক্ষ ইউক্রেনীয় নাগরিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ লক্ষই গিয়েছেন পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে।
রুশ বোমায় হতাহত হচ্ছেন ইউক্রেনের অসামরিক নাগরিকেরা। ছবি: পিটিআই
রাজধানী কিভের পাশাপাশি পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের বেশ করেকটি শহরেও রুশ হামলার অভিঘাত বেড়েছে।ইউক্রেন সরকার জানিয়েছে, সে দেশের পূর্বপ্রান্তের শহর ডেনিপ্রোর অসামরিক বিমানবন্দরটি মঙ্গলবার রুশ যুদ্ধবিমানের হানায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্র হানা শুরু হয়েছিল সোমবার রাত থেকেই। মঙ্গলবার ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিভে হানা দেয় রুশ ফাইটার জেট স্কোয়াড্রন। সেই সঙ্গে কিভ ঘিরে স্থলপথে অভিযান শুরু করেছে রুশ আর্মার্ড ডিভিশনের ট্যাঙ্কগুলি। হোসটোমেলে এক সাধারণ নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে ইউক্রেনীয় সেনার তরফে দাবি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যে বাসগুলি করে শহর ছাড়ছিলেন নাগরিকরা সে রকম চারটি বাস লক্ষ্য করে রুশ সেনারা গুলি চালায় বলেও অভিযোগ।