Murder

TMC: রাজনীতিতে আসতে চাই, জমি আমি ছাড়ব না, বলছেন নিহত অনুপমের স্ত্রী মীনাক্ষী

রবিবার রাতে খুন হন অনুপম। সোমবারই ওই ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সিআইডি-কে। সোমবার সিআইডি-র একটি দল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরপাড়া শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২২ ২০:৪৫
Share:

অনুপম দত্তের খুনের প্রতিবাদে মৌনী মিছিল, প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন স্ত্রী মীনাক্ষী দত্তের। —নিজস্ব চিত্র।

যে মাটিতে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে, সেই জমি তিনি ছাড়বেন না। ফলে রাজনীতিতেই তিনি আসতে চান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্পষ্ট ভাবে সে কথাই জানালেন পানিহাটির সদ্য নিহত তৃণমূল কাউন্সিলরের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত। গত লোকসভা, বিধানসভা এবং সদ্য হয়ে যাওয়া পুরভোটে দলের হয়ে ময়দানে নেমেছিলেন বলে জানিয়ে মীনাক্ষীর আবেদন, ‘‘আমি এক বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চাই।’’ মঙ্গলবার সকালেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে সারা দিনে সেই ‘দেখা করা’র প্রক্রিয়া কতটা এগিয়েছে বা আদৌ তা নিয়ে দলীয় স্তরে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়।

Advertisement

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহত কাউন্সিলর অনুপম দত্তের স্মরণে উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ায় একটি মৌনীমিছিল হয়। ওই মিছিল শেষ হয় অনুপমের বাড়িতে। মিছিল শেষে মোমবাতি জ্বালিয়ে অনুপমের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন মীনাক্ষী। ওই মিছিলে ছিলেন অনুপমের আত্মীয়, পরিজন, বন্ধু এবং পরিচিতরাও। মিছিলের পুরোভাগে থাকা মীনাক্ষী জানিয়েছেন, একাধিক নির্বাচনে ভোট-ময়দানে নামার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এই সূত্রেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি রাজনীতিতে আসতে চাই। পায়ে পা মিলিয়ে চলতে চাই। আমি আমার স্বামীর সঙ্গেই চলতে চাই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের ‘মা’। তাঁর উপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা আছে। তাঁর কাছে আমি যেতে চাই। এক বার পায়ে পড়তে চাই। আমার স্বামী এখানে প্রাণ হারিয়েছেন, এখানকার জমি আমি ছাড়ব না। আজ স্বামীর উদ্দেশে হাঁটলাম। এই হাঁটা শুরু হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যত দিন রাখবেন তত দিন আমি এই ভাবে পথ চলব।’’

রবিবার রাতে খুন হন অনুপম। সোমবারই ওই ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সিআইডি-কে। সোমবার দুপুরে সিআইডি-র পাঁচ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে। সোমবার মীনাক্ষী জানিয়েছিলেন, তিনি সিবিআই তদন্ত চান। যদিও মঙ্গলবার সকালেই তিনি বলে দেন, সিআইডি তদন্তেই তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআই তদন্তের দাবি আমি করিনি। সেই মুহূর্তের পরিস্থিতিটা আপনাদের বুঝতে হবে। আজ আমি মনকে শক্ত করেছি। প্রশাসন আছে, সিআইডি আছে। তাঁদের উপর আমাদের ভরসা আছে। এত দূর পর্যন্ত তাঁরা তদন্ত টেনে এনেছেন। তাঁদের উপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’

Advertisement

অনুপম হত্যায় জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে— শম্ভুনাথ পণ্ডিত ওরফে অমিত, সঞ্জীব পণ্ডিত ওরফে বাপি এবং প্রসেনজিৎ পণ্ডিত। মঙ্গলবার ভোর রাতে বাপি ও প্রসেনজিৎকে গ্রেফতার করে খড়দহ থানার পুলিশ। ধৃত শম্ভুনাথকে জেরা করে বাকি দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনিদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিল বাপি ও প্রসেনজিৎ। হোগলাবন থেকে পাওয়া শেওড়াফুলি-মেমারি রেলের টিকিটের সূত্র ধরেই ওদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মীনাক্ষীর দাবি, ‘‘বাপি বিজেপিকর্মী। পরিকল্পনা করে অনুপমকে হত্যা করা হয়েছে। বিজেপি জমি হারাচ্ছিল। তাই এই খুন। মাঠ নিয়ে বাপির সঙ্গে অনুপমের তর্কবিতর্ক হয়েছিল। তা থেকেই এর সূত্রপাত। ক্লাবের জমি দখল করতে চেয়েছিল বাপি। পাড়ার লোককে এমন ভাবে বোঝানো হয়েছিল যাতে মনে হয় অনুপমের জন্য মাঠ বেহাত হয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘দু’জনের দ্বারা এই খুন করা সম্ভব নয়। এর মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আছে। যারা ধরা পড়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে নেতার নাম বেরিয়ে আসবে নিশ্চয়ই। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement