এমনই হতে চলেছে এক্সপ্রেসওয়ে। ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লি থেকে উত্তরাখণ্ড, সড়কপথে যেতে সময় লাগে সাড়ে ছ’ঘণ্টা। সেই পথ এ বার পাড়ি দেওয়া যাবে মাত্র আড়াই ঘণ্টায়। ভ্রমণার্থীদের জন্য সুখবর, আগামী জানুযারিতেই খুলে যাচ্ছে দিল্লি-দেহরাদূন এক্সপ্রেসওয়ে। দিনক্ষণ স্থির না হলেও জানা গিয়েছে, বছরের শুরুতেই এই পথে যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত মিলবে।
দিল্লি থেকে দেহরাদূন যাওয়ার এই রাস্তার দৈর্ঘ্য ২১০ কিলোমিটার। পথে পড়বে জঙ্গলও। আগামী দিনে উত্তরাখণ্ড যাওয়ার পরিকল্পনা করলে সুবিধা নিতে পারেন এই এক্সপ্রেসওয়েটির। জেনে নিন, কী এর বিশেষত্ব?
যুক্ত হচ্ছে বাঘপত, সাহারানপুর: জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে উত্তর প্রদেশের বাঘপত, সামলি, সাহারানপুরের মতো বড় শহরগুলিতে যাওয়াও খুব সহজ হয়ে উঠতে চলেছে। দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু স্থান বা উত্তরাখণ্ড ভ্রমণ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
খরচ: ভারতমালা পরিযোজনার অন্তর্গত এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করতে ভারত সরকারের খরচ হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা।
নিরাপত্তা: এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা রুখতে রাস্তার পাশে রেলিং দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গল এলাকায় থাকবে ফেন্সিং। কোনও রকম দুর্ঘটনা ঘটলে থাকবে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা, ট্রমা কেয়ার সেন্টার, অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা।
বন্যপ্রাণীদের করিডর: দিল্লি-দেহরাদূন এক্সপ্রেসওয়ের ১২ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বন্যপ্রাণীদের যাতায়াতের পথ বা করিডর। এই স্থান রাজাজি জাতীয় উদ্যানের অন্তর্গত। বন্যপ্রাণীরা যাতে রাস্তায় না চলে আসে বা এলেও দুর্ঘটনা এড়ানো যায় সে জন্য এখানে ফেন্সিং থাকছে। পাশাপাশি, ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।
উত্তরাখণ্ডের রাজাজি জাতীয় উদ্যান ৮২০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। অসংখ্য হাতি, বাঘ, প্যান্থারের আবাসস্থল এই জঙ্গল। এখানে রয়েছে অন্তত ৪০০ প্রজাতির পাখি। জাতীয় উদ্যানের মধ্যে দিয়েই গিয়েছে গঙ্গা। এই পথের দৌলতে জঙ্গল ভ্রমণও অপেক্ষাকৃত সহজ হতে চলেছে।
পর্যটকদের সুবিধা হবে কী ভাবে?
এই পথে যাত্রীদের বাস ধরার সুবিধার জন্য বসার, দাঁড়ানোর সুবিধা থাকছে। এই এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন দিকে যাওয়ার যানবাহন পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও যাত্রীদের সুবিধায় বিভিন্ন জায়গায় শৌচালয়, বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখা হবে।
লোনি, গাজ়িয়াবাদ, সোনিয়া বিহার, করল নগর-সহ বিভিন্ন জায়গায় আরও সহজে যাওয়া যাবে।
উত্তরাখণ্ড মূলত পর্যটন নির্ভর রাজ্য। প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক এখানে আসেন। দিল্লি হয়ে উত্তরাখণ্ড যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে।
কী রকম সুবিধা?
হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে দেহরাদূন সরাসরি আসতে অন্তত ২৯ ঘণ্টা সময় লাগে। কেউ যদি হাওড়া থেকে রাজধানী, দুরন্ত এক্সপ্রেস ধরে নয়া দিল্লি আসেন, সময় লাগবে ১৭-১৮ ঘণ্টা। তার পর এই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যদি আরও ঘণ্টা তিনেকে দেহরাদূন পৌঁছনো যায়, তবে সামগ্রিক ভাবে সময় অনেকটাই কম লাগবে। তা ছাড়া যে কোনও রাজ্য থেকে দিল্লি যাতায়াতের ট্রেন, বিমান অনেক বেশি থাকে। ফলে দিল্লি হয়ে উত্তরাখণ্ড যাতায়াত ক্ষেত্র বিশেষে সহজ হতে পারে।