অবশেষে আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেলেন প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। ছবি: পিটিআই।
দিনভর টানটান নাটকের পর অবশেষে আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেলেন তিনি। আর তার পরেই বিহারের রাজধানী পটনায় সাংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রশান্ত কিশোর (পিকে) বললেন, ‘‘আদালত আমাকে বিনা শর্তে মুক্তি দিয়েছে।’’ সেই সঙ্গে জানালেন পটনার গান্ধী ময়দানে অবস্থান-বিক্ষোভ জারি রাখবেন তিনি।
সোমবার দুপুরে প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা জন সুরাজ পার্টির নেতার পিকে-কে আদালত জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন পটনার দায়রা আদালতের বিচারক আরতি উপাধ্যায়। ২৫ হাজার টাকার বন্ডে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বিচারক শর্ত দেন ভবিষ্যতে এই রকম প্রতিবাদে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। কিন্তু ধৃত পিকে এবং তাঁর আইনজীবী জামিনের বন্ডে সই করতে অস্বীকার করায় সোমবার বিকেলে তাঁকে পটনার জেলে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু, এর পর বিচারক উপধ্যায়ের এজলাসে নিঃশর্ত জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন পিকের আইনজীবী। প্রথমে রাজি না হলেও পরে বিচারক পিকে-কে বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিপিএসসি) পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তা বাতিলের দাবিতে রবিবার রাতে পটনায় গান্ধী ময়দানে ‘আমরণ’ অনশনে বসেছিলেন পিকে। তাঁকে সোমবার ভোরের আলো ফোটার আগেই সেখান থেকে তুলে যায় পুলিশ। আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রেফতারের পরে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় পটনা এমস হাসপাতালে। বেলা ১২টার পর পটনা সিভিল কোর্টে পিকে-কে তোলা হয়। পটনা পুলিশ জানিয়েছে, অশান্তি বাধানোর অভিযোগে এফআইআর দায়ের হওয়ায় পিকে-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দিকে, পিকে শিবিরের দাবি, মিথ্যা অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। তাই জামিনের বন্ডে সই করতে তিনি অস্বীকার করেছেন।
প্রসঙ্গত, বিপিএসসি পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই অশান্তি চলছে পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্যটিতে। চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ আন্দোলনে নেমেছেন। সেই আন্দোলনে প্রথম থেকেই রয়েছেন পিকে। যদিও প্রতিবাদী চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ এই আন্দোলনে রাজনীতির প্রবেশ পছন্দ করছেন না বলে জানিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি থেকে গান্ধী ময়দানে শুরু চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নাতেও তিনি যোগ দিয়েছিলেন। রবিবার ৭০তম বিপিএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে গান্ধী ময়দানে জমায়েত করেছিলেন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী। পিকে-ও সেখানে ছিলেন। রাতে সেই জমায়েত মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাড়ির দিকে এগোতে শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পিকের বিরুদ্ধে এফআইআরও হয়। তার পর তিনি অনশনে বসেছিলেন। অন্য দিকে, ৪ জানুয়ারি ২২টি সেন্টারে নির্দিষ্ট সংখ্যক পরীক্ষার্থীর পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়।