(বাঁদিকে) বিরাট কোহলি এবং সূর্যকুমার যাদব। ছবি: এক্স (টুইটার)।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন রোহিত শর্মা। সহ-অধিনায়ক ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। প্রতিযোগিতার কোনও কোনও সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিরাট কোহলিও। কখনও মাঠের মধ্যে আবার কখনও মাঠের বাইরে। তবে নিজেকে রেখেছিলেন সূক্ষ্ম পর্দার আড়ালে। বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন সূর্যকুমার যাদব।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা বলেন, কোহলির নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা সহজাত। খেলার সময় কঠিন পরিস্থিতিতে বা প্রয়োজন মনে করলে নিজেই এগিয়ে পরামর্শ দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা বা অন্য সতীর্থদের। মাঠে সারাক্ষণ সতীর্থদের উৎসাহিত করেন। আত্মবিশ্বাসী রাখার চেষ্টা করেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই ভাবে দলকে নিজের মতো করে নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কোহলি।
সূর্যকুমার বলেছেন, ‘‘মাঠে সব সময় তরতাজা, চনমনে থাকে কোহলি। কখনও ওকে ক্লান্ত দেখায় না। শুধু নিজের পারফরম্যান্স নয়, দলের সকলের পারফরম্যান্স নিয়েও খুব আন্তরিক। সবাই দেখেছেন ফাইনালের আগে পর্যন্ত ঠিক মতো খেলতে পারছিল না। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে এক দমই খুশি ছিল না। যে ভাবে খেলতে চাইছিল, সেটা পারছিল না। অথচ সব সময় দলের পাশে থেকেছে। মাঠে, অনুশীলনে বা কোনও অনুষ্ঠানে। নিজের মতো করে সবাইকে নেতৃত্ব দিয়েছে। উৎসাহিত করেছে সব সময়।’’
সূর্যকুমার জানিয়েছেন, কোহলি সব সময় দল নিয়ে ভাবেন। কী করলে আরও ভাল পারফরম্যান্স হতে পারে, তা নিয়ে কথা বলেন। শুধু নিজের নয়, দলের প্রত্যেক সদস্যের উন্নতি নিয়ে ভাবেন তিনি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সূর্যকুমার বলেছেন, ‘‘২০২২ সালে আমার অভিষেক হওয়া থেকে অধিকাংশ সময় কোহলির সঙ্গে ব্যাট করতাম। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়গুলিতে, বিশ্বকাপেও ওর সঙ্গে ব্যাট করেছি। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, কোহলির সঙ্গে ব্যাট করতে চাইলে ওর মতো ফিটনেস দরকার আমার। খুব দ্রুত খুচরো রান নিত কোহলি। বিশেষ করে দুই বা তিন রান নেওয়ার সময়। চার হবে বুঝতে পারলেও দৌড়ে দু’রান নিয়ে নিতে চাইত। বল বাউন্ডারিতে পৌঁছানোর আগেই ওর দু’রান নেওয়া হয়ে যেত। ফিটনেস ওই পর্যায় নিয়ে যেতে না পারলে কোহলির সঙ্গে ব্যাট করা সম্ভব নয়।’’
কোহলির মতো ফিট হওয়ার জন্য কী করেছিলেন আপনি? সূর্যকুমার বলেছেন, ‘‘দলের স্ট্রেনথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ সোহম দেশাইয়ের সাহায্য নিয়েছিলাম। দেশাইকে বলি, কোহলির সঙ্গে আমার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা কর। একেক দিন ট্রেনিং করতে ইচ্ছা করত না। শরীর বা মন সায় দিত না অত কঠোর ট্রেনিং করতে। সেই দিনগুলোতেও কোহলির সঙ্গেই থাকতাম। ৪০ মিনিট জিমে কী কী এবং কী ভাবে করছে সে সব বসে বসে দেখতাম।’’
সূর্যকুমার বলেছেন, কোহলি শুধু নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে সতীর্থদের অনুপ্রাণিত করেন না। ক্রিকেটটা এমন ভাবে খেলেন, যাতে সতীর্থরাও উন্নতি করতে বাধ্য হন। কোহলি ২২ গজে থাকলে সঙ্গী ব্যাটারকে বাড়তি চেষ্টা করতেই হয়। পর্দার আড়ালে থেকে কোহলি এ ভাবেই নেতৃত্ব দেন সতীর্থদের।