হার্দিক পাণ্ড্য (বাঁ দিকে) এবং বিরাট কোহলি। ছবি: পিটিআই।
প্রথম দু’টি ম্যাচ অনায়াসে জেতা হয়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপে ভারতের আসল পরীক্ষা শনিবার। আমদাবাদে সামনে পাকিস্তান। ১২ বছর পর ভারতে ট্রফি আসবে কি না তা নিয়ে সমর্থকেরা ভাবনা এখনও শুরু করেননি। কিন্তু পাকিস্তান ম্যাচ দু’দেশের কাছেই সম্মানের। ভারতের কাছে আরও বেশি। দেশের মাটিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে ভারত বিশ্বকাপের রেকর্ড ৮-০ করতে পারবে কি না, তা জানতে অপেক্ষার আর কয়েক ঘণ্টা বাকি।
তবে সেই ম্যাচে ভারতের দল কেমন হবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। দল নির্বাচন বরাবরই ভারতের কাছে একটা দুর্বলতার জায়গা। এই একটি ভুলের খেসারত যে কত বার কত জায়গায় দিতে হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও সেই জায়গায় ভুল হোক এটা কেউই চাইবেন না। মহারণের আগে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মার জায়গা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রথম ম্যাচে শূন্য করলেও আগের ম্যাচে শতরান করে ফর্মে তো ফিরেছেনই, একাধিক নজির ভেঙে দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও তিনি প্রথম দলে থাকছেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গী কে হবেন সেটা নিয়েই প্রশ্ন। শুভমন গিল ডেঙ্গি সারিয়ে আমদাবাদে পৌঁছেছিলেন বুধবার। বৃহস্পতিবার ইন্ডোরে অনুশীলনও করেছেন। বিশ্বকাপে প্রথম বার নামার আগে পর্যাপ্ত অনুশীলন হয়নি ঠিকই। কিন্তু শুভমনকে যদি না-ই খেলানো হবে, তা হলে আমদাবাদে নিয়ে যাওয়া হবেই বা কেন? তাই পরিস্থিতি দেখে অনেকেই মনে করছেন শুভমন থাকবেন প্রথম একাদশে। কারণ আমদাবাদ তাঁর আইপিএলের ঘরের মাঠ। এই মাঠে প্রচুর রান করেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি দলের মূল অস্ত্র হতে পারেন।
তিন নম্বরে বিরাট কোহলির নামা নিয়ে কারও মনে সন্দেহ নেই। প্রথম দু’টি ম্যাচেই তিনি অর্ধশতরান করেছেন। দু’বারই রান তাড়া করতে গিয়ে। তা ছাড়া পাকিস্তানকে সামনে পেলে যে তিনি জ্বলে ওঠেন এটা সবাই জানে। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরানও রয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান করেছেন।
চারে থাকছেন শ্রেয়স আয়ার। প্রথম ম্যাচে চূড়ান্ত ব্যর্থ। দ্বিতীয় ম্যাচে যখন তিনি নামলেন তখন বিশেষ কিছু করার ছিল না। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তান ম্যাচ শ্রেয়সের কাছে পরীক্ষার মঞ্চ হতেই পারে। নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার এটাই সেরা জায়গা। কারণ, দুম করে এই ম্যাচে ভারত নিশ্চয়ই সূর্যকুমার যাদবকে খেলিয়ে দিতে চাইবে না। পাঁচে থাকবেন কেএল রাহুল। প্রথম ম্যাচে অল্পের জন্যে শতরান পাননি। কিন্তু চোট সারিয়ে ফেরার পর থেকে দারুণ ফর্মে রয়েছেন। এশিয়া কাপে তাঁরও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান রয়েছে।
ছয়ে থাকবেন হার্দিক পাণ্ড্য। নিঃসন্দেহে বড় ম্যাচের ক্রিকেটার। ব্যাট-বল দু’ভাবেই দলের বিপদের সময় অবদান রাখতে পারেন। পাকিস্তানের মতো বড় ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ভালই। একই কথা প্রযোজ্য সাতে থাকা রবীন্দ্র জাডেজার ক্ষেত্রেও। আমদাবাদের পিচে তাঁর স্পিন বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে।
প্রশ্ন থাকছে আট নম্বর জায়গা এবং একজন পেসারকে নিয়েও। আটে প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। পরের ম্যাচে শার্দূল ঠাকুর। কিন্তু পিচের কথা ভেবেই অশ্বিনকে ফেরত আনা হতে পারে। তা ছাড়া এ ধরনের ম্যাচের জন্যে অশ্বিনের অভিজ্ঞতা খুবই দরকার। সঙ্গী হিসাবে তিনি পাবেন কুলদীপ যাদবকে। তিন স্পিনার থাকলে ভারতেরই সুবিধা।
যশপ্রীত বুমরা প্রথম একাদশে থাকছেনই। আগের ম্যাচে চার উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ় আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচুর মার খেয়েছেন। তাঁর জায়গায় নেওয়া হতে পারে মহম্মদ শামিকে। একটা বড় কারণ, আমদাবাদ শামির ঘরের মাঠে। আইপিএলে তিনি খেলেন গুজরাত টাইটান্সের হয়ে। এই মাঠে ভাল সাফল্য রয়েছে। বিশ্বকাপে এখনও খেলেননি। তাঁকে নামিয়ে দিলে নিজেকে প্রমাণ করতে শামি মরিয়া থাকবেন।
ভারতের সম্ভাব্য প্রথম একাদশ: রোহিত, শুভমন, কোহলি, শ্রেয়স, রাহুল, হার্দিক, জাডেজা, অশ্বিন, কুলদীপ, বুমরা এবং শামি।