বিরাট কোহলী। —ফাইল ছবি
ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় দীর্ঘ দিন দু’দেশের ক্রিকেট সম্পর্কও বিচ্ছিন্ন। আইসিসি বা এসিসি-র বহু দলীয় প্রতিযোগিতা ছাড়া মুখোমুখি হয় না দু’দেশ। তবু অবাধ্য আবেগ মানে না কাঁটা তারের বাধা। ক্রিকেটারদের জনপ্রিয়তা নির্বিঘ্নে পৌঁছে যায় সীমান্তের ওপারে।
তেমনই দেখা গেল পাকিস্তান সুপার লিগের একটি খেলায়। গ্যালারিতে এক দর্শকের হাতে বিরাট কোহলীর ছবি দেওয়া পোস্টার। তাতে বিরাট ভক্তের আর্জি, পাকিস্তানের মাটিতে বিরাটের শতরান দেখতে চান। দু’দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনে নিজের দেশে বিরাটের শতরান দেখা অনিশ্চিত। অজানা নয় তাঁর। কিন্তু ভক্তের কি মন মানে?
ক্রিকেটপ্রেমীরা কখনই সীমান্তের বাধা মানেননি। ইমরান খান, ওয়াসিম আক্রমদের জনপ্রিয়তা ভারতে কম ছিল না সুনীল গাওস্কর, কপিল দেবের থেকে। সচিন তেন্ডুলকরও প্রবল জনপ্রিয় ছিলেন পাকিস্তানে। ওপারের শাহিদ আফ্রিদি, শোয়েব আখতার বা এপারের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়রাও সমান জনপ্রিয় ছিলেন দু’দেশেই। পাকিস্তানের গ্যালারিতে বিরাটের ছবি সেটিই প্রমাণ করেছে।
দু’দেশের শীতল সম্পর্কের জন্য এখন আর পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকাদের দেখা যায় না আইপিএল-এ। ভারতীয়রাও খেলার সুযোগ পান না পিএসএল-এ। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের বাইশ গজের অনুপস্থিতি কি ঢাকতে পারবে ওই ক্রিকেট ভক্তের পোস্টার? এতে তো দুধের স্বাদ ঘোলেও মিটবে না। পোস্টারে লেখা শান্তির বার্তা কি পারবে নয়াদিল্লি বা ইসলামাবাদের বজ্র আঁটুনি ভেদ করতে? ভূস্বর্গ নিয়ে দু’দেশের টানাপোড়েন শেষ করতে?
১৪ বছরের ক্রিকেট জীবনে কখনো পাকিস্তানের মাটিতে খেলেননি বিরাট। এক দিনের ক্রিকেট এবং টি ২০-তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিরাটের পারফরম্যান্স ভাল হলেও কখনো টেস্ট খেলেননি বাবর আজমদের বিরুদ্ধে। কখনো খেলবেন কিনা, তাও অজানা। যেমন ভারতে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত বাবর। তবু, ক্রিকেটপ্রেমীদের আবেগ, ভালবাসায় বাধা হতে পারে না কূটনীতির জটিলতা। দু’দলের ক্রিকেটারদের বন্ধুত্বে প্রভাব ফেলে না রাজনীতির দূরত্ব। ফেললে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পান না নভজ্যোৎ সিংহ সিধু, সুনীল গাওস্কররা। অনেকেই বলেন, খেলার মাঠে রাজনীতির অনুপ্রবেশ সঠিক নয়। কেউ কেউ বলেন, ক্রিকেটই পারে দু’দেশের দূরত্ব ঘোচাতে। কিন্তু শত্রুতা যে বড় বালাই।