Bangladesh Cricket

৮৯ বছর পরে টেস্টে সবথেকে বড় জয়, ৫৪৬ রানে জিতল বাংলাদেশ, মিরপুরে ‘বাজ়বল’-এর বাংলা সংস্করণ

ইংল্যান্ডের মতোই আগ্রাসী মেজাজে টেস্ট ম্যাচ খেলল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সোয়া তিন দিনে জয় তো এলই। লিটনেরা রান তুললেন এক দিনের ক্রিকেটের মেজাজে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৩ ১৩:৩৯
Share:

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে রেকর্ড রানে জয়ের উচ্ছ্বাস বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। ছবি: আইসিসি।

ইংল্যান্ডের দেখানো পথে হেঁটে রেকর্ড ব্যবধানে টেস্ট জিতল বাংলাদেশ। ‘বাজ়বল’-এর বাংলা সংস্করণ দেখল ক্রিকেটবিশ্ব। মিরপুরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এক মাত্র টেস্টে লিটন দাসের দল জিতল ৫৪৬ রানে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে রানের বিচারে এটি তৃতীয় বড় জয়। গত ৮৯ বছরে এত বড় ব্যবধানে আর কোনও দল টেস্ট জিততে পারেনি। এটি বাংলাদেশের সবথেকে বড় ব্যবধানে টেস্ট জেতার রেকর্ড।

Advertisement

মিরপুরের স্কোরবোর্ডে চোখ রাখলে বাংলাদেশের একচেটিয়া দাপট বোঝা যাবে। টেস্ট ক্রিকেটে আফগানিস্তান তেমন শক্তিশালী দল হিসাবে পরিচিত নয়। তাদের সেরা অস্ত্র রশিদ খান খেলেননি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তাতে অবশ্য লিটনদের কৃতিত্ব কমছে না। বাংলাদেশ দু’ইনিংসে করেছে যথাক্রমে ৩৮২ রান এবং ৪ উইকেটে ৪২৫ রান। জবাবে আফগানিস্তানের দু’ইনিংসে রান ১৪৬ এবং ১১৫। মিরপুরের ২২ গজে আফগানদের মোট রানের থেকে একাই ৯ রান বেশি করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত! তিনি প্রথম ইনিংসে করেন ১৪৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১২৪ রান।

টেস্ট ক্রিকেটে সব থেকে বেশি রানের ব্যবধানে জয়ের নজির রয়েছে ইংল্যান্ডের। ১৯২৮ সালে তারা অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল ৬৭৫ রানে। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তারা ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল ৫৬২ রানে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ৫৪৬ রানে জয় থাকছে এই তালিকার তৃতীয় স্থানে। এর আগে বাংলাদেশের রানের নিরিখে সব থেকে বড় টেস্ট জয় ছিল জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে ২২৬ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।

Advertisement

পাঁচ দিনের ম্যাচ সোয়া তিন দিনে জিতেছেন লিটনরা। রান তুলেছেন এক দিনের ক্রিকেটের মেজাজে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ওভার প্রতি ৪.৪৪ রান তুলেছেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তুলেছেন ওভার প্রতি ৫.৩১ রান! সাদা বলের ক্রিকেটের মেজাজে টেস্টে ব্যাট করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। অন্য দিকে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বেন স্টোকসরা প্রথম ইনিংসে ওভার প্রতি ৫.০৩ রান তুলেছেন।

জয়ের জন্য ৬৬২ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন আফগানরা। অতি বড় আফগান সমর্থকও এই ম্যাচ জেতার কথা ভাবেননি। হাসমতুল্লাহ শাহিদির দল জেতেওনি। চাপের মুখে কার্যত তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়েছে তাঁদের দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংসে মিডল অর্ডারের তিন ব্যাটার কিছুটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে তাও হয়নি। তিন নম্বরে নামা রহমত শাহ ৩০ রান দলের পক্ষে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করিম জানাতের ১৮। তৃতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশের দেওয়া অতিরিক্ত ১৬। বল হাতে দাপট দেখালেন শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদরা। শরিফুল ২৮ রানে ৩ উইকেট এবং তাসকিন ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং এবাদত হোসেন।

ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হারলেও আফগান ব্যাটাররাও দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। প্রথম ইনিংসে ওভার প্রতি ৩.৭৪ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ওভার প্রতি ৩.৪৮ রান তুলেছেন তাঁরা। পাল্টা আক্রমণের কৌশল ফলপ্রসু না হলেও নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন তাঁরাও। সব দলই হয়তো ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ‘বাজ়বল’ দর্শনেই আস্থা রাখতে চাইছে। টেস্ট ম্যাচে ফলাফল নিশ্চিত করতে চাইছে। বদলে যেতে পারে টেস্ট ক্রিকেটের সংজ্ঞা। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান মিরপুর টেস্ট সেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement