প্রতীকী ছবি।
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরে বার বার সমাজের নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির কল্যানার্থে একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেছে মোদী সরকার। দেশের ছোট, বড় স্টার্ট আপ বা ব্যবসাগুলি দাঁড় করাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। মোদী সরকারের এমনই একটি প্রকল্পের নাম ‘স্বনিধি যোজনা’। সমাজের নিম্নবিত্ত এবং আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কথা ভেবেই এই প্রকল্পের সূচনা।
সমীক্ষা বলছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে নতুন প্রজন্ম বেশি করে ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে। তবে শুধু নতুন প্রজন্মই নয়, সমাজে এমন বহু মানুষ রয়েছেন যাঁরা নিজেদের উদ্যোগে কিছু করতে চান। কিন্তু প্রথমেই বাধ সাধে অর্থ। কোথা থেকে টাকা আসবে? কে করবে বিনিয়োগ? মনের মধ্যে কাজ করে চরম অনিশ্চয়তা। সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রেণি সব থেকে বেশি এই সমস্যার মুখোমুখি হন। কারণ স্থায়ী কোনও আয় না থাকায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতেও অসুবিধা হয়।
সেই কারণে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া গরিব শ্রেণির কথা ভেবে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসার ক্ষেত্রে বর্তমানে একাধিক সুবিধা করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মোদী সরকার কর্তৃক চালু করা এই প্রধানমন্ত্রী ‘স্বনিধি যোজনা’ থেকে যে পরিমাণ টাকা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, তা কিন্তু খুব একটা খারাপ নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের চালু করা যোজনায় যে সমস্ত ব্যক্তি নিজেদের নাম নথিভূক্ত করেছেন তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পেয়ে যাবেন ১০ হাজার টাকা।
ব্যবসা বা অন্য কোনও প্রয়োজনে এই টাকার জন্য আবেদন করা যাবে। এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন গরিব থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। আবেদনকারীকে অবশ্যই এক জন ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। যদিও বলে রাখা ভাল, কেন্দ্রীয় সরকার প্রদত্ত এই অর্থ আসলে ঋণই বটে! অর্থাৎ খুব সহজ করে বললে এক বছরের জন্য ১০ হাজার টাকা ঋণ দিচ্ছে কেন্দ্র। একটি নির্দিষ্ট সময়ের অন্তরে সেই টাকা সুদ সমেত ফেরত দিতে হবে গ্রাহককে। অবশ্য সেই সুদের হার সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্ক বা অন্য যে কোনও সংস্থার থেকে অনেকটাই কম।
তা ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, এই প্রকল্প নেওয়ার সময় গ্রাহককে কোনও গ্যারান্টি দিতে হয় না। স্রেফ নাম নথিভূক্ত করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পরে এক সঙ্গে বা মাসিক কিস্তির ভিত্তিতে ঋণ পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে সঠিক ভাবে, সঠিক সময়ে ঋণ শোধ করলে সরকারের তরফ থেকে ভর্তুকির সুবিধাও পাবেন ঋণ গ্রাহক। তবে এই ঋণ কেবলমাত্র এক বারই নিতে পারবেন গ্রাহক। সময়ের আগে পরিশোধ করে দিলেও পুনরায় ঋণের জন্য আবেদন করা যাবে না।
অবশ্য যে কোনও ব্যক্তি এই ঋণের জন্য আবেদনও করতে পারবেন না। হকার বা রাস্তার বিক্রেতা, নাপিত, সবজি বা ফল বিক্রেতা, পানওয়ালা, মুচি, রাস্তার খাবারের দোকান, ধোপা, চায়ের দোকান, ডিম বিক্রেতা, স্টেশনারি বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন। বলা বাহূল্য সমাজের অসংগঠিত ক্ষেত্রের কথা ভেবেই মূলত এই প্রকল্পের নকশা আঁকা হয়েছে।
অন্য দিকে, এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে যে ব্যক্তি ঋণ নেবেন তাঁর মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বর সংযুক্ত থাকা আবশ্যিক। এ ছাড়াও এই ঋণ কেবলমাত্র তাঁদেরই দেওয়া হবে যাঁরা ২৪ মার্চ, ২০২০-এর আগে এই সমস্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ পর্যন্ত দেওয়া হবে এই ঋণ। তাই যে ব্যক্তিরা এই মূহূর্তে এই ঋণের সুবিধা নেবেন বলে ভাবছেন তাঁরা দ্রুত এর আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করুন।
শুধুমাত্র শহরেই নয়। শহরতলি কিংবা গ্রামীণ খুচরো বিক্রেতা বা হকাররাও এই ঋণের আওতায় আসতে পারেন। এই ঋণের সুদে যে ভর্তুকি পাওয়া যায় তা তিন মাস অন্তর সরাসরি ঋণ গ্রহীতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই ভর্তুকির পরিমাণ সাত শতাংশ।