অভিযুক্ত অঙ্কিত চৌধরি। ছবি: সংগৃহীত।
দলিত সম্প্রদায়ের এক নাবালিকাকে অপহরণ করে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। পুলিশের কাছে ওই নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাও রুজু হয়েছিল। তবে ওই মামলায় নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের ফাঁসাতে নিজের দিদিকেই শ্বাসরোধ করে ইট দিয়ে থেতলে খুন করল গণধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবক। গণধর্ষণের শাস্তি এড়াতেই এমন করেছে বলে উত্তরপ্রদেশের এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ। শুক্রবার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ২১ বছরের অঙ্কিত চৌধরি উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে ১৮ জানুয়ারি এক নাবালিকাকে অপহরণ করে গণধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনায় অঙ্কিতের সঙ্গে তার মামাতো ভাই অক্ষয়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ছাড়াও দলিত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হিংসার মামলা ঝুলছিল।
এই আবহে গত ৭ ফেব্রুয়ারি, রবিবার আমরোহার পিরগড় এলাকা থেকে অঙ্কিতের দিদি নেহা চৌধরির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। অপরাধীর খোঁজে ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। সেই সময়ই একটি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন নেহার সঙ্গে ওই জায়গায় যাচ্ছে অঙ্কিত।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২৪ বছরের নেহা এমবিএ প্রস্তুতির পাশাপাশি নয়ডায় এক বেসরকারি সংস্থার কর্মরত ছিলেন। গত ৪ বছর ধরে দিল্লির লক্ষ্মীনগর এলাকায় থাকতেন তিনি। তবে দিল্লিবাসী নেহার দেহ আমরোহায় উদ্ধার হওয়াতে সন্দেহ হয় তাঁদের। এর পর ওই সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে অঙ্কিতকে আটক করা হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে অঙ্কিত। তাঁরা জানিয়েছেন, রবিবার অঙ্কিত তার দিদিকে জানান যে গণধর্ষিতার পরিবার আদালতের বাইরেই বিষয়টি মিটমাট করতে চায়। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনার নেহাকে থাকতে বলে অঙ্কিত। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, রবিবার নেহাকে দিল্লি থেকে নিয়ে আসতে একটি ট্যাক্সি করে সেখানে পৌঁছয় সে। তবে দিল্লি থেকে নেহার সঙ্গে ফেরার পথে আমরোহা গার্ডেনের কাছে ট্যাক্সি থামাতে বলে অঙ্কিত। এর পর ট্যাক্সি থেকে নেমে দু’জনে হেঁটে একটি স্কুলের কাছে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছন।
তদন্তকারীদের দাবি, আমরোহার ওই ফাঁকা জায়গাতেই নেহার শ্বাসরোধ করে অঙ্কিত। নেহা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে একটি ইট দিয়ে মাথা থেতলে তাঁকে খুন করে সে। এর পর তাঁর জামাকাপড় একটি ঝোপে লুকিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেয়। ওই ঘটনার পর থেকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অঙ্কিত লুকিয়ে ছিল বলে দাবি। তবে ঘটনার দিনই নেহার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তাঁর পরিচয়পত্র এবং রক্তমাখা একটি ইট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নিজের দিদিকে খুনের অভিযোগে অঙ্কিতকে গ্রেফতারের পর তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।