পদ্মিনীর সঙ্গে চিরঞ্জিৎ এবং সংগ্রাম।
পাকা কথা হয়ে যাওয়ার পরেও গ্রামের এক অনাথ মেয়ের বিয়ে হচ্ছিল না আর্থিক অনটনের কারণে। মায়ের কাছ থেকে খবরটা পেয়েছিলেন সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)-এর জওয়ান চিরঞ্জিৎ বেহরা। সহকর্মী তথা বন্ধু সংগ্রাম নায়েককে বিষয়টি জানান চিরঞ্জিৎ। তার পর দু’জনে সিদ্ধান্ত নেন দাদা হিসেবে মেয়েটির বিয়ের দায়িত্ব নেবেন তাঁরাই।
যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। মাকে ফোন করে চিরঞ্জিৎ বলেছিলেন, দু’এক দিনের মধ্যেই তিনি এবং সংগ্রাম গ্রামে আসছেন। এবং একইসঙ্গে জানিয়ে গিয়েছিলেন যে, দাদা হিসাবে তাঁরা অনাথ মেয়েটির বিয়ে দেবেন।
তরুণীর নাম পদ্মিনী বেহরা। বাড়ি ওড়িশার জাজপুর জেলার রম্পা গ্রামে। ২০১৯-এ তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। তার সাত বছর আগে মাকে হারিয়েছিলেন পদ্মিনী। মা-বাবাকে হারিয়ে ভাইকে নিয়ে দিনমজুরের কাজ করে দিন গুজরান করছিলেন। গত বছরেই এক ব্যবসায়ী পাত্রের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় পদ্মিনীর। কিন্তু বিয়ে করতে গেলে যে টাকা দরকার সেই টাকা জোটানোর সামর্থ ছিল না পদ্মিনীর। ফলে পাকা কথা হয়ে যাওয়ার পরেও টাকার অভাবে বিয়ে আটকে যায়।
ওই রম্পা গ্রামেরই ছেলে চিরঞ্জিৎ। কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। মায়ের কাছ থেকেই পদ্মিনীর খবর পেয়েছিলেন তিনি। তার পরই চিরঞ্জিৎ এবং সংগ্রাম কর্মস্থলে ছুটির আবেদন করেন। ছুটিও মঞ্জুরও হয়। এর পর রম্পা গ্রামে আসেন দু’জন। নিজের হাতে বিয়ের সমস্ত আয়োজন করেন দুই বন্ধু।
চিরঞ্জিৎ বলেন, “মেয়েটি বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়েছে। ওর পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। তাই ওর দাদা হিসেবে বিয়ের সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছি আমি এবং সংগ্রাম। এই কাজ করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।”
চিরঞ্জিৎ এবং সংগ্রাম তাঁদের সাধ্যমতো আয়োজন করে পদ্মিনীর বিয়ে দেন। গ্রামবাসীরাও তাঁদের দু’জনের ভূমিকায় আপ্লুত।