Delhi IAS Coaching Centre

দিল্লির বেসমেন্টকাণ্ডে ধৃত গাড়ির চালক জামিনে মুক্ত, প্রমাণই জোগাড় করতে পারল না পুলিশ!

গত ২৯ জুলাই দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনায় এক গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তিনি ওই সময়ে এলাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ২০:২৩
Share:

(বাঁ দিকে) জলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেই গাড়ি। ছবি: ভিডিয়ো থেকে। দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের সেই কোচিং সেন্টার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় এক গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ, তিনি জমা জলের উপর দিয়ে বেপরোয়া ভাবে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়েছিলেন। সেই কারণে জলের স্রোতের ধাক্কায় বেসমেন্টের দরজাটি ভেঙে যায়। মনুজ খাটুরিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার জামিন দিয়েছে উচ্চতর আদালত।

Advertisement

গত ২৯ জুলাই দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের একটি কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে গিয়েছিল। ডুবে মৃত্যু হয়েছিল তানিয়া সোনি, শ্রেয়া যাদব এবং নবীন ডেভলিনের। তিন জনেই আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বেসমেন্টের লাইব্রেরিতে ছিলেন তাঁরা। আচমকা সেখানে বৃষ্টির জল ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তে ভরে ওঠে বেসমেন্ট। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় পাননি তিন পড়ুয়া। এই ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তার মধ্যে একটিতে দেখা গিয়েছে, কোচিং সেন্টারের বাইরে জমা জলের উপর দিয়ে একটি গাড়ি যাচ্ছিল। তার চাকায় জলের স্রোত তৈরি হয়। সেই জলের ধাক্কায় ভেঙে যায় বেসমেন্টের দরজা। তার পরেই এই দুর্ঘটনা বলে অভিযোগ (ভাইরাল ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)

ভিডিয়োয় যে গাড়িটি দেখা গিয়েছে, তা চালাচ্ছিলেন মনুজ। তাঁকে পরের দিন গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিসিপি সেন্ট্রাল জানিয়েছিলেন, মনুজ জমা জলের উপর দিয়ে নিয়ম না মেনে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আদালতেও তেমনটাই জানায় দিল্লি পুলিশ। তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছিল আদালত।

Advertisement

বুধবারই জামিনের আবেদন জানিয়ে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মনুজ। সেখানে তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। অভিযোগ, ওই দিন জলমগ্ন রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতে স্থানীয় কয়েক জন মনুজকে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি সতর্ক হননি।

নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বৃহস্পতিবার উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হন মনুজ। তাঁর স্ত্রীর বক্তব্য ছিল, আদৌ তিনি জোরে গাড়ি চালাননি। বরং, জমা জলের উপর দিয়ে নিজে নিরাপদ স্থানে পৌঁছতে চেয়েছিলেন। জল সরাতে কিংবা ওই রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ কেন ব্যবস্থা নেয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন ধৃতের স্ত্রী।

বুধবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে দিল্লি হাই কোর্ট পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে। গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে শুনে পুলিশের কার্যপদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। হাই কোর্টের বিচারপতিরা বলেছিলেন, ‘‘পুলিশ করছেটা কী? দিল্লি পুরসভার কারও বিরুদ্ধে এখনও কেন পদক্ষেপ করা হয়নি? রাস্তায় যিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তাঁর ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে। কিছু কি ধামাচাপা দিতে চাইছে পুলিশ?’’ শুক্রবার পুর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ আধিকারিকদের আদালতে তলব করা হয়েছে। হাজিরা দেওয়ার কথা দিল্লি পুরসভার কমিশনার, দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার এবং তদন্তকারী আধিকারিকের। হাই কোর্টের অসন্তোষের পরের দিনই নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেলেন মনুজ। তিনি ছাড়াও এই ঘটনায় আরও ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কোচিং সেন্টারের মালিক, কো-অর্ডিনেটর এবং বেসমেন্টের মালিকেরা। তাঁদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement