(বাঁ দিকে) জলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেই গাড়ি। ছবি: ভিডিয়ো থেকে। দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের সেই কোচিং সেন্টার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় অন্যান্যদের সঙ্গে এক গাড়ির চালককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডিসিপি সেন্ট্রাল জানান, ভিডিয়োতে ওই ব্যক্তিকে জমা জলের উপর দিয়ে জোরে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। তখনই জলের স্রোতের ধাক্কায় ভেঙে যায় কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টের দরজা। হু হু করে জল ঢুকে পড়ে বেসমেন্টের লাইব্রেরিতে। কিন্তু ধৃত চালকের স্ত্রী পুলিশের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, আদৌ তাঁর স্বামী জোরে গাড়ি চালাননি। বরং জল জমে থাকার কারণেই সাবধানে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি।
দিল্লিকাণ্ডে চালক মনুজ খাটুরিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর স্ত্রী সীমা খাটুরিয়া সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘‘আমার স্বামী জোরে গাড়ি চালাননি। সকলের কাছে ভিডিয়োটি আছে। সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। গাড়ির গতি মোটেই খুব বেশি ছিল না। বরং রাস্তায় জল জমে থাকার কারণে গাড়ি নিয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি।’’
গোটা ঘটনায় কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষকেই দুষছেন ধৃতের স্ত্রী। এ ছাড়া, তিনি পুলিশের গাফিলতির দিকেও আঙুল তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোচিং সেন্টারের মালিক বেসমেন্টে লাইব্রেরি চালাচ্ছিলেন। সেটার তো অনুমতিই ছিল না! বেসমেন্ট কেবল গুদামঘর হিসাবে ব্যবহারের ছাড়পত্র ছিল ওঁদের কাছে। তা ছাড়া, ওই রাস্তায় এত জল জমার পর পুলিশের উচিত ছিল, গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া। তা হলে আর এই দুর্ঘটনা ঘটত না।’’
দিল্লির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কোচিং সেন্টারের সামনে জমা জলের উপর দিয়ে একটি গাড়ি যাচ্ছে। তার ফলে ওই মুহূর্তে জলের স্রোত ধাক্কা মারছে বেসমেন্টের দরজায়। সেই ধাক্কাতেই বেসমেন্টের দরজা ভেঙে সেন্টারে জল ঢুকতে শুরু করে বলে অভিযোগ। এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
পুলিশ ওই সেন্টারের মালিক, কো-অর্ডিনেটর এবং বেসমেন্টের মালিকদের গ্রেফতার করেছে। তাদের বক্তব্য, ঘটনার আগের মুহূর্তে যে গাড়িটি কোচিং সেন্টারের সামনে থেকে যাচ্ছিল, সেটি নিয়ম মানেনি। রাস্তায় জল থাকা সত্ত্বেও তা জোরে চালানো হচ্ছিল। তার ফলেই জলের ধাক্কায় বেসমেন্টের দরজা ভেঙে যায়। চালকের বিরুদ্ধে অবহেলার কারণে দুর্ঘটনার মামলা রুজু করা হয়েছে।
দিল্লির ওই কোচিং সেন্টারে জল ঢুকে মৃত্যু হয়েছে শ্রদ্ধা যাদব, নবীন ডালভিন এবং তানিয়া সোনির। তাঁরা আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বেসমেন্টে জল ঢোকার ফলে উপরে উঠে আসার সময়টুকুও পাননি তাঁরা। পরে পুলিশ তাঁদের দেহ উদ্ধার করে।