Delhi IAS Coaching Centre

‘দিল্লি পুলিশ করছেটা কী!’ বেসমেন্টকাণ্ডে গাড়ির চালককে গ্রেফতার নিয়ে ভর্ৎসনা হাই কোর্টের

দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলল দিল্লি হাই কোর্ট। রাস্তা দিয়ে যে গাড়ি যাচ্ছিল, তার চালকের গ্রেফতারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৪ ২১:৩৯
Share:

দিল্লির কোচিং সেন্টারে তিন পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনার তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলল দিল্লি হাই কোর্ট। ওই কোচিং সেন্টারের বাইরে দিয়ে গাড়ি চালানোর ‘অপরাধে’ চালককে গ্রেফতার প্রসঙ্গেও ভর্ৎসনা করা হয়েছে পুলিশকে। তবে ওই চালক অবশ্য জামিন পাননি। বুধবার তাঁর জামিন খারিজ করে দিয়েছে নিম্ন আদালত।

Advertisement

দিল্লির ঘটনার একটি মামলা হাই কোর্টে উঠেছে। সেই সংক্রান্ত শুনানিতে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মনমোহন এবং বিচারপতি তুষার রাও গেডেলার বেঞ্চ এই তদন্তপ্রক্রিয়াকে ‘অদ্ভুত’ তকমা দিয়েছে। কোচিং সেন্টারের পাশ দিয়ে গাড়ি চালানোর জন্য চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে শুনে আদালতের মন্তব্য, ‘‘দিল্লি পুলিশ করছেটা কী? তারা কি পাগল হয়ে গিয়েছে? তদন্তকারী আধিকারিকেরা কী করছেন?’’ দিল্লি পুরসভার কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে এখনও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে লাইব্রেরি ছিল। সেখানেই জল ঢুকে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তিন আইএএস পড়ুয়ার। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে কোচিং সেন্টারের মালিক ছাড়াও রয়েছেন এক গাড়ির চালক। যিনি ঘটনার আগের মুহূর্তে ওই সেন্টারের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়েছেন। ভিডিয়োতে তাঁর গাড়িটি দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, তিনি জমা জলের উপর দিয়ে জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সেই কারণে জলের স্রোত গিয়ে ধাক্কা মারে সেন্টারের বেসমেন্টের দরজায়। তাতেই দরজাটি ভেঙে যায়। পুলিশ ওই গাড়ির চালকের জামিনের বিরোধিতা করেছে এবং তিনি নিয়মবিরুদ্ধে ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ করেছে।

Advertisement

এই মামলায় বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘দিল্লি পুলিশ কি কিছু ধামাচাপা দিতে চায়? কেন তারা এখনও দিল্লি পুরসভার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি? পুরসভার আধিকারিকদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হলে ভবিষ্যতে এমন কোনও ঘটনাই আর ঘটবে না।’’

দিল্লির ঘটনার তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের আবেদন জানিয়ে একটি সংস্থা হাই কোর্টে মামলা করেছে। সেই সংক্রান্ত শুনানিতেই পুলিশ এবং পুরসভার ভূমিকা ভর্ৎসিত হয়েছে আদালতে। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘পুরসভার কোনও আধিকারিককে কি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে? কেন এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক ছিল না, কেন রাস্তায় জল জমেছিল, তা জানতে চাওয়া হয়েছে?’’ এর পরেই বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘খুবই অদ্ভুত ভাবে তদন্ত চলছে।’’

আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন দিল্লি পুরসভার কমিশনার, পুলিশের ডেপুটি কমিশনার এবং তদন্তকারী আধিকারিককে আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ২৭ জুলাই যে কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকেছিল, সেখানে লাইব্রেরি চালানোর অনুমতি ছিল না। কেবল বেসমেন্টটিকে গুদামঘর হিসাবে ব্যবহার করার ছাড়পত্র ছিল কর্তৃপক্ষের কাছে। তা সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে বেসমেন্ট কাজে লাগানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই এলাকায় আরও ১৩টি কোচিং সেন্টার সিল করে দিয়েছে পুলিশ। সেখানেও বেসমেন্টকে ব্যবসার কাজে লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় যে গাড়ির চালককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, বুধবার মুখ খুলেছেন তাঁর স্ত্রী-ও। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর স্বামী আদৌ জোরে গাড়ি চালাননি। জমা জলের উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। ভাইরাল ভিডিয়োতেই তা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে বলে জানান ধৃতের স্ত্রী। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement