গ্রহণের সময় বিরিয়ানি ভোজ। প্রতীকী ছবি।
সূর্যগ্রহণ চলাকালীন রান্না করা বা খাওয়াদাওয়া নিষেধ। সমাজে এমন কথা বহুল প্রচলিত। কিন্তু তার কি আদৌ কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? বিশেষজ্ঞরা বলেন, মহাজাগতিক এই ঘটনার সঙ্গে মানুষের খাওয়াদাওয়া বা রান্নার কোনও সম্পর্কই নেই। এত দিন গ্রহণের সময় খাওয়া নিষেধের যে প্রথা চলে আসছে তা স্রেফ কুসংস্কার। এই কুসংস্কার কাটাতেই এ বার গ্রহণের মধ্যে পাত পেড়ে বিরিয়ানি খাওয়ালেন ওড়িশার ভুবনেশ্বরের কয়েক জন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ। নিজেরাও খেলেন কব্জি ডুবিয়ে।
ওই গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য প্রতাপ রথ বলেন, ‘‘এ সব একেবারেই বাজে কথা। গ্রহণের সময় আমিষ খাবার রান্না করলে বা খেলে আমাদের শরীরে তার কোনও বাজে প্রভাব পড়তে পারে না। আমার বয়স ৬৬ বছর। আমি জীবনে কোনও দিন এই বুজরুকি মানিনি।’’
গোষ্ঠীর আর এক সদস্য দেবেন্দ্র সুতার বলেন, ‘‘আমরা এ সবে বিশ্বাস করি না। বিজ্ঞান আজ এত এগিয়ে গিয়েছে যে, আমরা জেনে গিয়েছি সূর্যকে কেউ গিলে ফেলে না। এটা মহাজাগতিক ঘটনা। যেটা ঘটা বা না ঘটার মধ্যে আমাদের কোনও হাত নেই।’’ আর এক সদস্যের মতে, রাহু সূর্য বা চন্দ্রকে গিলে ফেলে এমন কোনও ঘটনা সত্যিই ঘটে না। আধুনিক বিজ্ঞান তা প্রমাণ করে দিয়েছে। গ্রহণের সময় খাবার খেলে বা রান্না করলে খারাপ কিছু হওয়ার সম্ভাবনা অমূলক। তাই এই অবস্থায় কুসংস্কার মেনে চলার কোনও কারণ নেই।
প্রসঙ্গত, সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে একাধিক কুসংস্কার রয়েছে সমাজের মনে। কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি না থাকলেও সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক এই কুসংস্কার আমাদের মনে গেঁথে গিয়েছে। ভুবনেশ্বরের বিজ্ঞানমনস্করা মানুষের মধ্যে থেকে সেই কুসংস্কার দূর করতেই বিরিয়ানি ভোজের আয়োজন করলেন। যেখানে গোষ্ঠীর সদস্যদের পাশাপাশি পাত পেড়ে বিরিয়ানি খেলেন অনেক সাধারণ মানুষও।