Anubrata Mondal

সবই ‘ভালবাসার দান’, কেষ্টদার ‘অনুরোধ’ ফেলতে না পেরে কালী প্রতিমাকে গয়না দিতেন ওঁরা

শুরুর দিকে কালী প্রতিমাকে আনুমানিক ৩০-৪০ ভরি সোনার গহনা দিয়ে সাজানো হত। কিন্তু, যত দিন গিয়েছে, গয়না বেড়েছে। ২০১৯ সালে ২৬০ ভরি গয়নায় কালীকে সাজিয়েছিলেন কেষ্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৩৯
Share:

অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজোয় গয়নার বহর বছরের পর বছর বেড়েছে। ফাইল চিত্র।

তাঁর কালীপুজোর আয়োজন নিয়ে যত না কথা, তার চেয়ে ঢের বেশি চর্চা প্রতিমার গয়না নিয়ে। বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডলের কালীপুজোয় গয়নার বহর বছরের পর বছর বেড়েছে। সেই বিপুল পরিমাণ গয়না এল কোথা থেকে, গরু পাচার মামলার সূত্রে সেই বিষয়টিও এখন সিবিআইয়ের নজরে। বীরভূম জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার অবশ্য দাবি, সবই ‘ভালবাসার দান’, কেষ্টদার ‘অনুরোধ’ ফেলতে না-পেরে দলের নেতাদের একাংশের থেকে শুরু করে অনেক ব্যবসায়ী ফি বছর গয়না দিয়েছেন কালী প্রতিমার জন্য।

Advertisement

সূত্রের খবর, শুরুর দিকে কালী প্রতিমাকে আনুমানিক ৩০-৪০ ভরি সোনার গহনা দিয়ে সাজানো হত। কিন্তু, যত দিন গিয়েছে, গয়না বেড়েছে। ২০১৯ সালে ২৬০ ভরি গয়নায় কালীকে সাজিয়েছিলেন কেষ্ট। ২০২০ সালে অতিমারির ওই ভয়ঙ্কর পর্বেও গয়নার পরিমাণ বেড়েছিল। কালীমূর্তিকে ৩০০ ভরির কিছু বেশি স্বর্ণালঙ্কারে সাজানো হয়েছিল। ২০২১-এ সেই গয়নাই বেড়ে হয় ৫৭০ ভরি! টাকার অঙ্কে প্রায় তিন কোটি। মুকুট, সীতাহার-সহ নানা ধরনের হার, চেন, চূড়, রতনচূড়, আংটি, চুড়ি, বালা, বাউটি, বাজুবন্ধ প্রভৃতি মিলিয়ে ওই বিপুল সোনার গয়না নিজের হাতে কালীকে পরিয়েছিলেন অনুব্রত।

এক জন জেলা সভাপতি হয়ে অনুব্রত এত সোনার গয়না কোথা থেকে পেলেন, তা সিবিআইয়ের নজরে রয়েছে। তবে দলের নেতাদের একাংশের দাবি, গত কয়েক বছরে ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি থেকে শুরু করে আরও নেতা এবং বিধায়কেরাও কালীপুজোর সময় কিছু না কিছু গয়না দেবীকে প্রণামী হিসেবে দিয়েছেন। জেলার একাধিক প্রোমোটার ও সোনার ব্যবসায়ীরাও ‘গয়নাদাতার’ তালিকায় আছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। তেমন কিছু ব্যবসায়ীকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদও করেছে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, পাড়ুই থানা এলাকার এক নেতা গত বছর কালী প্রতিমার জন্য তিন লক্ষ টাকায় গলার হার বানিয়ে দিয়েছিলেন জেলা সভাপতির এক কথায়। জেলার এক শীর্ষ নেতাও অনুব্রতের কথায় লক্ষাধিক টাকার গয়না গড়িয়ে দেন।

Advertisement

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, এত পরিমাণ গয়নার এক অল্প অংশ পার্টি অফিসের একটি আলমারির লকারে রাখা থাকে। অধিকাংশ গয়নাই থাকে অনুব্রতের কিছু নিকটাত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠের ব্যাঙ্কের লকারে। এক শীর্ষ নেতার কথায়, “দেবীর গয়না সুরক্ষিত অবস্থাতেই রয়েছে। সময় হলে পরে আবার পরানো হবে।” অনুব্রত জেলে থাকায় এ বছর অবশ্য অলঙ্কারের বাহুল্য চোখে পড়েনি বলেই খবর। ২৫ থেকে ৩০ ভরির মতো গয়না পরানো হয়েছে কালীকে। পাশাপাশি, দলের নেতাকর্মীরা এ বার আর নতুন করে গয়না দেননি। গচ্ছিত গয়না থেকেই প্রতিমাকে গয়না পরানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement