মঙ্গলবার লোকসভায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি সৌজন্যে: সংসদ টিভি।
শপথগ্রহণের সময়ে চণ্ডীস্তোত্র পাঠ করেছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার বিজেপি সাংসদদের উদ্দেশে বিবিধ টিকাটিপ্পনিতে সে দিনও সংসদে নজর কেড়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সংসদের প্রথম বক্তৃতায় কল্যাণ যা করলেন, তাতে মহুয়া মৈত্র, সায়নী ঘোষ, সাজদা আহমেদরা তো বটেই, ভিন্রাজ্যের সাংসদেরাও হেসে গড়িয়ে পড়লেন।
কল্যাণের বক্তৃতার অংশবিশেষ সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করেছে মঙ্গলবার দুপুর থেকে। যেখানে কল্যাণকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘বলেছিল, এ বার ৪০০ পার! খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। খেলা তো অনেক রকম হয়। চু কিতকিতটাও একটা খেলা। চু কিতকিতে চু ধরা ছিল ৪০০তে । তার পর কিতকিতকিতকিতকিতকিতকিতকিতকিত...কত হল? ২৪০!’’
কল্যাণ যখন ‘কিতকিত’ বলতে বলতে দু’হাত উপর থেকে নীচের দিকে নামাচ্ছেন, তখন দেখা যায় হাসির রোল উঠেছে সংসদে। যদিও কল্যাণের পাশেই বসে থাকা লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুগম্ভীর মুখেই বক্তৃতা শুনছিলেন। এর পর কল্যাণ যখন অন্য সাংসদদের দিকে তাকিয়ে তাঁর কথা বলছেন, তখন স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, চেয়ারের উদ্দেশে বক্তৃতা করতে। তা শুনে আবার শুরু করেন কল্যাণ। স্পিকারের উদ্দেশে কল্যাণ বলেন, ‘‘স্যর, আমি তো আপনাকেই দেখছি। অন্য কাউকে দেখছি না। আপনার থেকে বেশি স্মার্ট এখানে কেউ নেই। ভাল অভিনেত্রীও এসেছেন। কিন্তু তাঁকে দেখছি না, আপনাকেই দেখছি।’’ এ কথা শুনে তৃণমূলের অভিনেত্রী সাংসদ জুন মালিয়া, শতাব্দী রায়েরাও হাসতে থাকেন। অনেকের মতে, কল্যাণ ভাল অভিনেত্রী বলতে হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডী থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী কঙ্গনা রানাউতকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন।
নিজের বক্তৃতায় নির্বাচন কমিশনকেও তীব্র আক্রমণ করেন কল্যাণ। সংসদে শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন অনেক সময়ে বিজেপি নেতাদের কথায় কাজ করেছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, সাত, আট বা দশ হাজারের মতো অল্প ভোটে যে সব আসন বিজেপি জিতেছে, সেগুলি সম্ভব হয়েছে নির্বাচন কমিশনের বদান্যতায়।
গত শীকতালীন অধিবেশনে রাজ্যসভায় বিরোধী সাংসদদের গণ সাসপেনশন নিয়ে উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের নকলনবিশি করেছিলেন কল্যাণ। নতুন সংসদ ভবনের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কল্যাণের সেই কাণ্ড ক্যামেরাবন্দি করতে দেখা গিয়েছিল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও। এ বার সংসদেও শপথ এবং প্রথম বক্তৃতায় নজর কেড়ে নিলেন কল্যাণ।