রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
চোপড়া যাবেন বলে সোমবারই তড়িঘড়ি চলে এসেছিলেন দিল্লি থেকে শিলিগুড়ি। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে সেই শিলিগুড়ি থেকেই আবার দিল্লির উদ্দেশে রওনা হলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নির্যাতিতদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন না চোপড়ায়। রাজভবনসূত্রে খবর, চোপড়া সফর হঠাৎই বাতিল করেছেন রাজ্যপাল।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল বোস। সেই বৈঠকে রাজ্য সরকারের উদ্দেশে চোপড়ার ঘটনা নিয়ে কিছু আক্রমণাত্মক মন্তব্যও করেন। কথা ছিল, তার পরে বাগডোগরা হয়ে সড়কপথে চোপড়া পৌঁছবেন তিনি। সেই মতো চোপড়ায় মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনীও। কিন্তু দুপুর ১টা নাগাদ হঠাৎই জানা যায় রাজ্যপাল আর চোপড়ায় আসছেন না। তিনি শিলিগুড়ি থেকেই ফিরে যাবেন।
কেন রাজ্যপাল চোপড়ায় এলেন না, তার কারণ স্পষ্ট করেনি রাজভবন। যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, চোপড়ায় রাজ্যপালকে ঘেরাও করার একটি কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছিল। সূত্রের খবর, মাসকয়েক আগে রাজ্যপাল চোপড়ায় এসেছিলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র কাটা ড্রেনে পড়ে চার শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে। তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি রাজভবনের তরফে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই অর্থ এখনও পর্যন্ত পায়নি মৃত শিশুদের পরিবার। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বিষয়েই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর প্রস্তুতি চলছিল।
তবে কি বিক্ষোভের ভয়েই ফিরলেন রাজ্যপাল? সরকারি ভাবে রাজ্যপালের হঠাৎ সফর বাতিলের কারণ নিয়ে কোনও পক্ষই কোনও বক্তব্য জানায়নি। তবে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালের উচিত তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পালন করা। এরা দরিদ্র পরিবার। ওই অর্থের জন্য এর-ওর দরজায় ঘুরছে।’’
অন্য একটি সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে যে, রাজ্যপালের সঙ্গে চোপড়ার নির্যাতিতদের দেখা না হলেও কথা হয়েছে। শিলিগুড়িতে বসেই ফোনে ওই নির্যাতিতদের কথা বলেন রাজ্যপাল। একই সঙ্গে ওই নির্যাতিতদের কলকাতার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার বিষয়েও কথা হয়। একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজ্যপালের সঙ্গে যাতে নির্যাতিতরা দেখা না করেন, তার জন্য সোমবার থেকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল তাঁদের। সে জন্যই তাঁরা দেখা করেননি রাজ্যপালের সঙ্গে। যদিও হামিদুলের বক্তব্য, তাঁরা স্বাগতই জানিয়েছিলেন রাজ্যপালকে। তিনি চোপড়ায় এসে আসল ঘটনাটি জেনে নিতে পারতেন। নির্যাতিতদের নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া পর্যন্ত কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। হামিদুলের কথায়, ‘‘রাজ্যপাল এলে সরেজমিনে সঠিক তথ্য বুঝে নিতে পারতেন। কিন্তু এলেন না কী কারণে, সেটা অন্য ব্যাপার।’’