দিল্লির এমস। —ফাইল চিত্র।
দু’ডজনের কাছাকাছি রাজ্যে তৈরি হয়েছে এমস হাসপাতাল। কিন্তু তাতেও ভিড় কমছে না দিল্লির এমসে। বাড়তি চাপ কমাতে এ বার দিল্লির এমসে আসা রোগীদের বর্হিবিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রোগীর রাজ্যের এমসে ‘রেফার’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে দিল্লির এমসের বর্হিবিভাগে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার রোগী বিভিন্ন বিভাগে দেখাতে আসেন। এমস সূত্রের মতে, দেখানোর সুযোগ যাঁরা পান না, তাঁদের সংখ্যাও ১৫-২০ হাজার। এমসের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সন্দীপ আগরওয়ালের কথায়, ‘‘বর্হিবিভাগে রোগীদের অধিকাংশ বিহার ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। এমসে ভিড় করার আরও একটা কারণ, এখানে চিকিৎসার খরচ খুব কম।’’
আজ সুশাসন দিবস উপলক্ষে এমসে ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরতে গিয়ে এমসের ডিরেক্টর এম শ্রীনিবাস বলেন, ‘‘ইতিবাচক পথে হাঁটা সত্ত্বেও এমসের বর্হিবিভাগে রোগীর ভিড় কমানো যাচ্ছে না। হাসপাতালের কাছে হাজার শয্যার বিশ্রামকেন্দ্র করে দেওয়া সত্ত্বে রোগীরা সেখানে যেতে চান না। হাসপাতাল চত্বরেই ভিড় করেন।’’
দিল্লি এমসের চিকিৎসক-শিক্ষার্থীরা যাতে আরও বেশি করে গবেষণায় মনোযোগ দিতে পারেন, সে কারণে ওই প্রতিষ্ঠানের রোগীর ভিড় কমাতে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও এমস গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। বর্তমানে দেশে ২৬টি এমসের মধ্যে ২২টি চালু হয়েছে বলে দাবি সরকারের। এর মধ্যে পটনা, ঋষিকেশ, ভোপাল, ভুবনেশ্বরের মতো এমসগুলির বয়স প্রায় এক দশক। কিন্তু জহওরলাল নেহরুর হাতে গড়া দিল্লি এমস আজও ধার ও ভারে বাকিদের থেকে এগিয়ে। চিকিৎসক সন্দীপ বলেন, ‘‘আমাদের সাফল্য আমাদের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে আজও এক নম্বরে দিল্লি এমস। ফলে ভিড় কমছে না।’’ চিত্রটি পাল্টাতে তাই পটনা, ভোপাল, রায়পুরের রোগীদের বর্হিবিভাগে দেখা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তাঁদের নিজের রাজ্যের এমসে রেফার করা হচ্ছে। যাতে পরবর্তী চিকিৎসা ওই রোগীরা নিজেদের রাজ্যেই করাতে পারেন। যদিও এর জন্য কোনও প্রশাসনিক নির্দেশ জারি হয়নি। দিল্লি এমসের রোগী দেখার জন্য বাধ্য নন অন্য রাজ্যের এমসগুলি। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভিড় কমাতে এখন অন্য এমসের উপরে ভরসা রাখছেন দিল্লি এমসের যাত্রীরা। তবে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে প্রায় ত্রিশ শতাংশ চিকিৎসকদের পদ খালি থাকাও যে একটি বড় কারণ তা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করে নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ চিকিৎসকেরা।