লাদাখে শান্তি ফেরাতে মুখোমুখি বৈঠকে দুই সেনা। ছবি: পিটিআই।
অরুণাচলের তাওয়াং সীমান্তে উত্তেজনার আবহেই পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-য় জটিলতা কাটাতে কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক করল ভারতীয় ও চিনা সেনা। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বকেয়া সমস্যাগুলির সমাধানে পরবর্তী পর্যায়ে পদক্ষেপ করা হবে।’
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বৃহস্পতিবার বৈঠকের কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘জমে থাকা সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানের জন্য গত মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) কোর কমান্ডার স্তরের ১৭তম বৈঠকে অকপটে এবং গভীর ভাবে আলোচনা হয়েছে।’’ তবে পূর্ব লাদাখের চুসুল-মলডো পয়েন্টের ওই বৈঠকে সুনির্দিষ্ট ভাবে ডেপসাং, ডেমচকের-এর মতো এলাকা থেকে চিনাবাহিনী সরার বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস মিলেছে কি না, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ানে অনুপ্রবেশকারী চিনা ফৌজের সঙ্গে ভারতীয় সেনার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে এলএসিতে শান্তি ফেরাতে কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক শুরু হয়। গত আড়াই বছর ধরে দফায় দফায় চলছে সেই বৈঠক। ১৫,০০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় তৃতীয় শীতের মরসুম কাটানো দুই দেশের কয়েক হাজার সেনার ‘অতিরিক্ত বাহিনী’ কবে পুরোপুরি সরে আসবে, সে বিষয়ে কোনও দিশা মেলেনি।
এর আগে গত জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ভারতীয় ও চিনা সেনার কোর কমান্ডার স্তরের ১৬তম বৈঠক হয়েছিল। সেখানে প্যাংগং হ্রদের উত্তর তীরের ফিঙ্গার এরিয়ার কিছু অংশ এবং পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫ ও পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৬-য় উত্তেজনা কমাতে ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট)-র এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল।
কিন্তু ওই বৈঠকের কয়েক মাস পরেই লাদাখের একাধিক রাজনৈতিক নেতা অভিযোগ তোলেন, ভারতীয় সেনাকে নিজের এলাকাতেই পিছিয়ে আসতে হয়েছে। চুশুলের আঞ্চলিক পরিষদের সদস্যে কোনচোক স্টানজ়িন বলেন, ‘‘আমাদের সেনা পেট্রলিং পয়েন্ট-১৫ এবং পেট্রলিং পয়েন্ট-১৬ থেকে সরেছে। ওই এলাকা ৫০ বছর ধরে আমাদের হাতে ছিল। এটা আমাদের কাছে বড় ধাক্কা। আমাদের পশুচারণের মাঠ এখন দু’দেশের সেনার মধ্যে বাফার জ়োন হয়ে গিয়েছে।’’