ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় তাঁর সঙ্গে প্রথম বারের জন্য বৈঠক করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চলতি মাসেই। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, তার আগে আজ বাজেট ঘোষণায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ‘পরমাণু শক্তি মিশন’ গড়ার কথা ঘোষণা করে বার্তা দিলেন ওয়াশিংটনকে।
সেইসঙ্গে উঠে আসছে ভারত-আমেরিকা অসামরিক পরমাণু চুক্তির দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাগুলিও। আজ তাঁর বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, কোনও পরমাণু চুল্লিতে দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার সংক্রান্ত চুক্তিটির পরিবর্তন করা হবে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির সহযোগিতা আরও মসৃণ করার জন্য এই সিদ্ধান্ত। প্রসঙ্গত এই দায়বদ্ধতা চুক্তির কারণেই আমেরিকার বেসরকারি সংস্থাগুলি পিছিয়ে ছিল ভারতের সঙ্গে পরমাণু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ভারতের এই ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ আগেই ভারতের তিনটি পরমাণু সংস্থার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে ওয়াশিংটন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে ভারতের আজকের ঘোষণার লক্ষ্য কি অদূর ভবিষ্যতে ট্রাম্প সরকারের সঙ্গে অসামরিক পরমাণু বাণিজ্যে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া?
২০১০ সালে একটি পরমাণু চুল্লিতে দুর্ঘটনা এবং তার দায়বদ্ধতা চুক্তির কারণে ১৬ বছর দু’দেশের মধ্যে এ ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়নি। ওই চুক্তি অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক অসামরিক পরমাণু প্রকল্প শুরু হওয়ার বহু বছর পরেওযদি দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলেও বিনিয়োগকারী বিদেশি সংস্থা (এ ক্ষেত্রে আমেরিকান সংস্থা) ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। প্রশ্ন উঠছে এই চুক্তিটি সংশোধন করে যদি এই সীমাহীন দায়বদ্ধতাকে স্বল্পমেয়াদি করে দেওয়া হয়, তাহলে কি আমেরিকার বেসরকারি সংস্থাগুলি উৎসাহ পাবে ভারতের পরমাণু বাজারে ঢুকতে? পাশাপাশি নির্মলার ঘোষণায় রয়েছে, এই পরমাণু মিশনের আওতায় রাখা হবে ছোট মাপের চুল্লি (স্মলার মডিউলার রিঅ্যাক্টর)। তার জন্য ধার্য করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। ২০৩৩ সালের মধ্যে এই চুল্লিগুলিকে কার্যকরী করার লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে বলা হয়েছে, অন্তত ৫টি চুল্লি এর মধ্যে দেশজ হতে হবে। প্রসঙ্গত, আমেরিকার সঙ্গেও ছোট মাপের চুল্লির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে কথা বলছে সাউথ ব্লক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রে এই বেসরকারি সংস্থাগুলিকে এগিয়ে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। তাঁর কথায়, “এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের অসামরিক পরমাণু শক্তিক্ষেত্র শক্তিশালী হবে। দেশের উন্নয়নের প্রশ্ন বড় অবদান রাখবে এই সিদ্ধান্ত।”
অন্য দিকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ আজ তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে খুশি করতে আজ পরমাণু দায়বদ্ধতা চুক্তি সংশোধন করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। অরুণ জেটলির নেতৃত্বে বিজেপি ২০১০ সালে অসামরিক পরমাণু দায়বদ্ধতা চুক্তির পিঠেছুরি মেরেছিল।”